বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী রয়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। মূলত ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনা তেলের দরপতনের পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪৬ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমে হয়েছে ৬৭ দশমিক ১৪ ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম কমেছে ৪৭ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ, ব্যারেলপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ৫০ ডলারে।
বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীরা ওপেক প্লাসের বৈঠকের দিকে নজর রাখছেন। সেখানে উৎপাদকরা উৎপাদন আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এনজেড রিসার্চের এক নোটে বলা হয়েছে, বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ওপেক প্লাস যদি বাজারে আরও তেল ছাড়ে, তবে ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম নতুন চাপের মুখে পড়বে। এতে বাজারে তেলের উদ্বৃত্ত আরও বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে যখন চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
ওপেকভুক্ত দেশ ও তাদের মিত্রদের (ওপেক প্লাস) আট সদস্য আগামী রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। বৈঠকে অক্টোবরে তেল উৎপাদন আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে আলোচনার সঙ্গে জড়িত দুটি সূত্র। বাজারের অংশীদারিত্ব ফিরে পেতে এ পদক্ষেপ নিতে পারে সংগঠনটি।
এর আগে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ২২ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওপেক প্লাস। পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অতিরিক্ত ৩ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
হাইটং সিকিউরিটিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎপাদন বাড়ানোর পরও গত কয়েক মাস ধরে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের দাম বিশ্ববাজারে সবচেয়ে শক্তিশালী আঞ্চলিক দামের অবস্থান ধরে রেখেছে। এটি সৌদি আরবসহ অন্যান্য ওপেক সদস্যদের আরও উৎপাদন বাড়ানোর ব্যাপারে আস্থা জুগিয়েছে।
কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার বিশ্লেষক বিবেক ধর বলছেন, এপ্রিল থেকে ওপেক প্লাসের উৎপাদনের কোটা বাড়ানোর মূল কারণ হতে পারে বাজারে বড় অংশীদারিত্ব দখল করা। এখন তারা আগের মতো ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলার দামের চেয়ে বরং ৬০ থেকে ৬৫ ডলার দামে ব্রেন্ট তেল বিক্রি করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।
তিনি আরও জানান, যদি ব্রেন্টের দাম এই সীমায় নেমে আসে, তাহলে মার্কিন তেল ডব্লিউটিআইর দামও ৫০ ডলারের শেষ ভাগ থেকে ৬০ ডলারের শুরুর ভাগে নেমে যেতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের শেল তেল উৎপাদন অর্থনৈতিকভাবে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
বাজারের সক্রিয়রা এখন মার্কিন অপরিশোধিত তেলের মজুতের সরকারি তথ্যের দিকে নজর রাখছেন। আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২৯ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে মার্কিন অপরিশোধিত তেলের মজুত ৬ লাখ ২২ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। এটি রয়টার্সের জরিপে অংশ নেয়া বিশ্লেষকদের পূর্বানুমানের বিপরীত, যা বাজারে চাপ বাড়াচ্ছে।
আমার বার্তা/এল/এমই