নেত্রকোনায় পূর্বশত্রুতার জেরে পাল্টাপাল্টি হামলায় দুজন নিহতের ঘটনায় চারদিন পর থানায় মামলা হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত নিহতদের স্বজনরা পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে মোট ৫৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রথম মামলাটি দায়ের করেছেন নিহত সাবেক ইউপি সদস্য দুজাহানের স্ত্রী ও একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের সদস্য জসুমা খাতুন। তিনি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলী আমজাদের ছেলে তামিম ইকবালকে (২৮) প্রধান আসামি করে এজাহারভুক্ত ২৮ জনসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করেছেন।
অন্য মামলাটি দায়ের করেছেন নুর মোহাম্মদের বাবা মোজাম্মেল হোসেন। তিনি নিহত দুজাহানের সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেল চালক মো. মাতু মিয়াকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনকে নামীয় ও আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করেছেন। বাদী নিজেও এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ আছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট শনিবার রাতে জেলা বিএনপির সম্মেলন শেষে সাবেক ইউপি সদস্য দুজাহান মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে মৌগাতি ইউনিয়নের জামাটি গ্রামে ডাক্তার নবী হোসেনের বাড়ির সামনে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়।
পরে মোটরসাইকেল চালক মাতু মিয়া স্থানীয়দের নিয়ে নিহত দুজাহানের বিরোধীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে নুর মোহাম্মদ, তার মা, বাবা ও চাচাসহ চারজন গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নিলে নুর মোহাম্মদ মারা যান। অন্যদের মধ্যে নুর মোহাম্মদের মা ও চাচাকে ঢাকায় এবং বাবাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়।
দুজাহান ও নুর মোহাম্মদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ৩১ আগস্ট রোববার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরদিন তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলা দায়ের করলেও মূল আসামিরা এখনও পলাতক। এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক। স্থানীয়রা জানান, খুনের পর থেকে গ্রামটি প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই