ই-পেপার শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জন্মই ওদের আজন্ম পাপ

অলোক আচার্য:
১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮

পৃথিবীতে সব মানুষের অধিকার সমান। পৃথিবীর আলো,বাতাস ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ম অনুযায়ী সবার সমান ভোগ করার কথা। তবে মানুষের মুখের বুলি এবং কাগজে তৈরি নিয়ম তো আলাদা। আইন যেমন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করা হয় না সেভাবেই পৃথিবীর অধিকার বঞ্চিত মানুষের সংখ্যাও কম নয়। জন্মগতভাবেই মানুষ বঞ্চনার শিকার হয়। এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয় শিশুরা। সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয় শিশুরা। কারণ শিশুরা এত জটিল মানসিকতা বোঝে না। ওরা কেবল বুঝতে পারে ভালোবাসা। কোনো শিশুর জন্ম হচ্ছে রাজদালানে,কোনো শিশুর জন্ম হচ্ছে ফুটপাতে আবার কারও জন্ম হচ্ছে ডাস্টবিনে! আমরা মুখে মুখে পাপ এবং পূন্যের কথা বলি। হিসাব রাখি। সমাজে দোষী ও নির্দোষের হিসাব কষি। শুনতে নির্মম লাগলেও তো আমাদের দেশে এটা হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই পত্রিকার পাতায় খবর দেখা যায় ডাষ্টবিনে শিশুর কান্নার আওয়াজ। কেউ একজন নবজাতকটিকে ফেলে গেছে ডাষ্টবিনে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে শিশুটি বেঁচে যায়, আবার ভাগ্য যদি আরও বেশি খারাপ হয় তাহলে শিশুটি শিয়াল বা কুকুরের খাবারে পরিণত হয়। এই নির্মম সংবাদও আমরা পাই। যতই মানুষ সভ্যতার উৎকর্ষতার দিকে ধাবিত হচ্ছে ততই যেন মানুষ আরও বেশি হিংস্র, আরও বেশি পশুত্ব মেনে নিচ্ছে। মানুষের মন থেকে উঠে গেছে স্রষ্টার প্রতি ভীতি, উঠে গেছে মানবিকতা অথবা মানুষ হিসেবে নিজের কাজটুকু। মানুষ পরিণত হয়েছে অমানুষে। শিশুটির পরিচয় কি হবে এই দুশ্চিন্তায় তার গর্ভধারিণী মা অথবা অন্য কেউ শিশুটিকে রাস্তায় ফেলে যায়।

এই জন্মের পাপ তো শিশুটির ছিল না। ছিল এই সমাজের। দায় রয়েছে এই রাষ্ট্রের। একটি শিশুর পরিচয় দিতে কেন এত দুর্ভোগ পোহাতে হবে? মানুষ-শুধু এই সত্যটুকু মেনে নিয়ে তাকে এই সমাজে বেঁচে থাকার সাহস কেন দিতে পারবে না এই সমাজ। শিশুটি জবাব চাইবে কার কাছে। কে শিশুটির এই পরিণতির দায় নিবে। মানবাধিকার সংগঠন সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর সারাদেশে মোট ৯৪ জন নবজাতক উদ্ধার করা হয়েছে। সবাই মৃত। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সাতজন, মার্চে পাঁচজন, এপ্রিলে সর্বোচ্চ আটজন, মে মাসে ছয়জন, জুন মাসে তিনজন, জুলাই মাসে পাঁচজন, আগস্টে দুজন, সেপ্টেম্বরে সাতজন, অক্টোবর ও নভেম্বরে চারজন ও ডিসেম্¦রে ছয়জন নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ২০১৭ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছর রাস্তা বা ডাস্টবিন বা ঝোঁপ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৭ নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। তার আগের বছর নবজাতক উদ্ধারের সংখ্যা ছিল ৯ জন। অর্থাৎ বছর বছর এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর থেকে এটা স্পষ্ট সমাজ আরও বেশি নষ্টের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সমাজের মানুষের নীতিগুলো আজ মরে গেছে। এ কারণেই একটি নবজাতককে এই পৃথিবীতে পরিচয় দিতে এত কুন্ঠা বোধ করছি। যদি সেটাই হয় তাহলে জন্ম দিতে হবে কেন? যে পাপ আমরা বড়রা করছি সেই পাপ ঢাকতে একটি জীবন হত্যা করছি। অথচ এটিও একটি খুন! এর পিছনে কে রয়েছে তা যেমন আর জানা সম্ভব হচ্ছে না,তেমনি একটি খুনের দায়ে তাকে কোনো শাস্তি ভোগও করতে হচ্ছে না। চারদিকে অধঃপতনের সুর। পাপ নামক শব্দটি মূল্যহীন। ধর্ম মানুষকে সর্বদা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে উৎসাহিত করে।

এই ধর্ম বিরুদ্ধ কাজেও আমাদের মনে কোনো ভীতির সঞ্চার হচ্ছে না। এটি এমন একটি অপরাধ যা আইন দিয়ে ঠেকানো সম্ভব না। কারণ এই অপরাধের শিকার শিশুটি কারও কাছে বিচার চাইতে আসছে না। কিন্তু অপরাধ হচ্ছে। এটি ঠেকাতে সমাজে নৈতিকার চর্চা করতে হবে। ধর্মের মূল মর্মবাণী অন্তরে গ্রথিত করতে হবে। আমরা আধুনিকতার নামে অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে পারি না। প্রতি বছর অসংখ্য শিশুকে ডাস্টবিনে কুড়িয়ে পাওয়া কোনো সমাজের আধুনিকতার পরিচায়ক হতেই পারে না। এটি বিপরীতে সমাজের নগ্ন চরিত্রের প্রকাশ। এভাবে সমাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পাপ কাউকেই রেহাই দেয় না। অতীতে বহু সভ্যতার ধ্বংসের নমুনা রয়েছে। হয়তো তারা আমাদের চেয়েও জ্ঞানী ছিল। কিন্তু সমাজের নৈতিক অধঃপতন ঠেকাতে ব্যর্থ ছিল। ফলে এই পতন। আমাদের এই অধঃপতন রোধ করতে হবে। বিবেক জাগ্রত করতে হবে। মানুষের মূল্যবোধ আর মনুষ্যত্বের জাগরণ অত্যন্ত দরকার।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট, পাবনা।

আমার বার্তা/জেএইচ

ভ্রাম্যমান আদালত (মোবাইল কোর্ট) এ বিচার কার মাধ্যমে হবে তার সুরাহা কেন জরুরি 

সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দুইদিনব্যাপী সিভিল সার্জন সম্মেলনে সরকারের নিকটে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল

মা: ভালোবাসার নিরবধি প্রতিমা

মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার। আবার এসেছে বিশ্ব মা দিবস—একটি দিন যা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে

রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অনন্য উচ্চতায় তারেক জিয়া

২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে

হজে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক সুস্হ্যতায় কী করবেন

প্রতিবছরের মতো এবারও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। হজযাত্রীদের
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার

‘জাতীয় যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ, আহ্বায়ক তারিকুল, সদস্য সচিব জাহেদুল

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সেই শিক্ষার্থীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

সাত মিনিটের ২ গোলে নেপালকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

বোতল কাণ্ডে আটক জবি শিক্ষার্থী, ডিবি অফিস ঘেরাও এর হুঁশিয়ারি

টেকসই সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস জাতিসংঘের

মাহফুজকে বোতল নিক্ষেপ, ডিবি কার্যালয়ে যুবক

অবৈধদের সাধারণ ক্ষমা মালয়েশিয়ার, ফিরতে পারবেন দেশে

আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, যতটা ভয়াবহ হতে পারে

আল্লাহ মানুষের যেসব গুণ পছন্দ করেন

ইউজিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষক সমিতির নেতারা

দাবি না মানা পর্যন্ত একচুল সরবো না: জবি শিক্ষক সমিতি

ছাত্রদল নেতা হত্যা ও উপদেষ্টার মাথায় বোতল মারা চক্রান্তের অংশ: এ্যানি

রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা কি সফল হবে?

ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ করেছে চাকা খুলে পড়া বিমানটি

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না হওয়ার কারণ জানালেন তুহিন মালিক

সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও

নামাজ শেষে জবি শিক্ষার্থীদের সমাবেশ শুরু

ভারতের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলল পাকিস্তান

রাশিয়ার স্থলবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করলেন পুতিন