লোহিত সাগর দিয়ে যাতায়াতের সময় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলা থেকে বাঁচতে নতুন কৌশল নিচ্ছে বাণিজ্যিক জাহাজগুলো। সম্প্রতি নিজেদের জাতীয়তা ও ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করে ট্র্যাকিং সিস্টেমে বার্তা দিচ্ছেন এসব জাহাজের নাবিকেরা, যাতে হুথিদের হামলা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ইরান-সমর্থিত হুথিরা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা শুরু করে। কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহে তারা পরপর দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে। হুথি নেতা আবদুল মালিক আল-হুথি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো পণ্যবাহী জাহাজকে লোহিত সাগর দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ লোহিত সাগর ও বাব আল-মানদাব প্রণালি দিয়ে যেসব জাহাজ চলাচল করছে, সেগুলোর অনেকেই এখন নিজেদের স্বচালিত ট্র্যাকিং সিস্টেম এআইএস-এ বার্তা যোগ করছে।
এসব বার্তার মধ্যে রয়েছে: ‘অল ক্রু মুসলিম’ (সব নাবিক মুসলিম), ‘অল চাইনিজ ক্রু অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ (সব নাবিক ও ব্যবস্থাপনা চীনের), ‘নো ইসরায়েল লিংক’ (ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই), ‘আর্মড গার্ডস অন বোর্ড’ (জাহাজে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে) প্রভৃতি।
নৌ-নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের বার্তা যুক্ত করা হুথিদের আক্রমণ এড়ানোর মরিয়া প্রচেষ্টারই প্রতিফলন। তবে হুথিদের গোয়েন্দা প্রস্তুতি এবং লক্ষ্যবস্তুর তথ্য সংগ্রহ এতটাই গভীর যে, এই বার্তাগুলোর বিশেষ কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও মনে করছেন তারা।
গত সপ্তাহে হুথিরা যে দুটি জাহাজে হামলা চালায়, সেই বহরের কয়েকটি জাহাজ অতীতে ইসরায়েলি বন্দরে পণ্য পরিবহন করেছে বলে জানিয়েছেন শিপিং বিশ্লেষকরা।
>> জাহাজ চলাচল কমছে
গত ১ জুলাই বাব আল-মানদাব প্রণালি দিয়ে গড়ে ৪৩টি জাহাজ চলাচল করেছিল, ৯ জুলাই তা কমে দাঁড়ায় ৩২টিতে, ১০ জুলাই এর সংখ্যা ছিল ৩৫টি। হুথিদের হামলা শুরুর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রতিদিন গড়ে ৭৯টি জাহাজ চলাচল করতো এই পথে।
সাম্প্রতিক হামলার পর লোহিত সাগর দিয়ে যাতায়াতকারী জাহাজের বিমা খরচ দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। কিছু বিমা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট যাত্রাপথের কভারেজ স্থগিত রেখেছে।
নৌবিমা প্রতিষ্ঠান এঅন জানিয়েছে, হুথিদের সর্বশেষ হামলার পর লোহিত সাগর ও বাব আল-মানদাব প্রণালীকে ‘উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই পথে জাহাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়মিত নজরদারি ও নিরাপত্তা কৌশলে পরিবর্তন আনা জরুরি। - সূত্র: রয়টার্স
আমার বার্তা/জেএইচ