মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ৫ নম্বর বাউশিয়া ইউনিয়নে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই ইউনিয়ন পরিষদের সেবায় নানামুখী হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে সেবা প্রত্যাশী নারী-পুরুষের ভিড় দেখা গেলেও অধিকাংশই সেবা নিতে গিয়ে পড়েন ভোগান্তিতে। পরিষদে উপস্থিত ছিলেন না চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, ফলে নাগরিক সনদ কিংবা ট্রেড লাইসেন্স নিতে আসা অনেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হন।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন সরকার ও জাহিদুল ইসলাম জানান, “ট্রেড লাইসেন্স নিতে এসে শুনি চেয়ারম্যান নেই। আগের মতো একদিনে কাজ শেষ হচ্ছে না। এখন দুই-তিন দিন সময় লাগবে।” আরও কয়েকজন অভিযোগ করেন, আগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবাদুল হক দায়িত্বে থাকাকালে পরিষদের সেবা কার্যক্রম ছিল অনেক দ্রুত ও সুশৃঙ্খল। একদিনেই নাগরিক সনদ ও অন্যান্য পরিষেবা পাওয়া যেত।
উল্লেখ্য, এবাদুল হক স্বল্পমেয়াদি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়েই বাউশিয়ার কাজলা নদী পরিষ্কার, নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কাজ শুরুসহ বেশ কিছু জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন। তাঁর দায়িত্বপালনের আন্তরিকতা ও কর্মতৎপরতা ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মুখে মুখে প্রশংসিত হয়েছে।
এদিকে, নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সম্পর্কে অনেকেই অভিযোগ করেন, অতীতেও তিনি পরিষদে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন না, যার ফলে সেবাপ্রত্যাশীদের চরম হয়রানি পোহাতে হতো।
চেয়ারম্যানের উপস্থিতির খবরে পরিষদ এলাকায় বিএনপি, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হন। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, “সরকার পতনের পর মিজান চেয়ারম্যানের এই পরিষদে আসার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন, এখন তাঁর উপস্থিতি জনমনে ক্ষোভ তৈরি করছে।”
চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি, ফলে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাউশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া জানান, “হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী মিজানুর রহমান পুনরায় দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পরিষদে উপস্থিত না থাকলেও সেবা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাঁর বরাবর পাঠানো হবে এবং স্বাক্ষরিত সনদ এক বা দুই দিনের মধ্যে জনগণকে বিতরণ করা হবে।”
ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, পুনর্নিযুক্ত চেয়ারম্যান জনগণের সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পূর্বের ভুল শুধরে একটি কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করবেন।
আমার বার্তা/মুকবুল হোসেন/এমই