ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অপহরণের ঘটনার ৬ দিন পর ২১ মার্চ রাতে ঢাকা থেকে চাঞ্চল্যকর এক অভিযানে পুলিশ অপহরণের শিকার ব্যবসায়ী নয়ন দাস ২৬ কে উদ্ধার করার পাশাপাশি ৫ অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক বাজার থেকে গত ১৬ মার্চ সকাল ৯ টায় ব্যবসায়ী নয়ন দাস (২৬) কে তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ২ জন ব্যক্তি মোবাইলে ১টি ছবি দেখিয়ে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে নয়ন দাসের বাবা রামু চন্দ্র দাস (৪৮) বাদী হয়ে ১টি অভিযোগ দায়ের করেন নাসিরনগর থানায়। এ ঘটনায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নয়নের অপহরনের খবরে ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নয়ন দাস অপহরণের মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করে সংসার জীবনে পা রেখেছিলেন। এ ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে এবং রাজধানী ঢাকায় এ অভিযান চালায়।
ভুক্তভোগী নয়ন দাসের বাবা রামু দাস জানায়, অপহরণকারীরা দাবি করেছিল সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে নয়নকে তারা নিরাপদে ফেরত দিবে, অন্যথায় বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা অন্য কোথাও জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল। তবে তাদের বেধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে গেলেও অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি পরিবারের। আদরের সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন মাধ্যমের সহায়তা নিয়ে অর্থ সংগ্রহ করলেও অপহরণকারী চক্রের মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অপহৃত নয়নকে উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খাইরুল আলম বলেন, “আমরা ভুক্তভোগীকে ৬ দিন পর নিরাপদে উদ্ধার করেছি এবং অপহরণের সাথে জড়িত ৫ অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করেছি"। উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন জেলা পুলিশ সুপার।অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এটি পূর্বপরিকল্পিত নাকি অন্য কোনো কারণে সংঘটিত হয়েছে, তা তদন্তের পর পরিষ্কার হবে।
নয়ন দাসের উদ্ধারের খবর পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা আনন্দ প্রকাশ করেন এবং পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। একইসঙ্গে এলাকাবাসীর মধ্যেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে।