জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ১৮তম দিনের আলোচনায় নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারের নিয়োগ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যমান সংবিধানের ১১৮ (১) সংশোধন করে নতুন সংশোধিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে৷ সংশোধিত প্রস্তাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইনে নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনার সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন থাকবে।
তিনি জানান, স্পিকারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি থাকবে। বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে এই কমিটি পরবর্তী ৫ বছরের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ করার উদ্দেশ্যে সংসদে প্রণীত আইনে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ‘ইচ্ছাপত্র’ ও প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি আহ্বান করবেন। একইসঙ্গে নিজস্ব উদ্যোগে উপযুক্ত প্রার্থী অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৮তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব বিষয় জানান।
এ সময় কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে বাছাই কমিটির অন্যান্য সদস্য হবেন বিরোধী দলীয় ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা, প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। এই কমিটি আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের জীবনবৃত্তান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে, সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মধ্য থেকে এক জনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্ধারিত প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি তাদেরকে কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য নিয়োগ দেবেন। স্পিকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, বিদায়ী কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে, অথবা অন্য কোনও কারণে পদ শূন্য হলে পরবর্তী দিন থেকে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এছাড়া, জাতীয় সংসদ কর্তৃক নির্বাচন কমিশনের ওপর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পৃথক আইন ও আচরণবিধি প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে, বিদ্যমান সংবিধানের উপানুচ্ছেদ ২,৩,৪,৫ ও ৬ অপরিবর্তিত থাকবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বুধবারের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ, ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ জাসদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আমার বার্তা/এমই