জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তা পূরণ না হলে জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যারা অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিলেন, নেপথ্যে ছিলেন; তারা অনেকে এখনো অবহেলিত। আমলাদের অনেক রদবদল হলেও সেভাবে সুফল মিলছে না। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হলে এ সরকারের বিরুদ্ধেও জনগণ অবস্থান নেবে। এ কথাটি যেন আমরা ভুলে না যাই। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে বিভক্ত না হয়ে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
শনিবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় জাদুঘরে ‘গ্রাফিতি প্রদর্শনী ও বিপ্লবের লাল কবিতা পাঠ’ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানের অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববাসী বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে বুঝতে চাচ্ছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে একটি অভিনব অভ্যুত্থান হয়েছে, যাকে বিপ্লবের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান জেন-জি প্রজন্ম; যে প্রজন্মকে সবাই ভোগবাদী, স্বার্থবাদী হিসেবে ভেবেছিলেন, তারাই নিজের জীবন উৎসর্গ করে এ বিপ্লব সংঘটিত করেছে, যা বিশ্বে প্রথম।’
‘ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ বিপ্লব ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ দেখতে চায় আমরা এখন কী কাজ করি। আমরা দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা শুধু ভাঙতে পারি না, আমরা গড়তেও পারি। যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণ করবো।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যে ছাত্র-জনতা এ অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছেন, তাদের আরও বেশি সংগঠিত হতে হবে। কারণ এ আন্দোলনের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা তারাই ধারণ করেন। নতুন বাংলাদেশ গঠনে অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতাকে রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি হতে হবে।’
>> নতুন সংবিধান দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়ে গেছে
গ্রাফিতির মাধ্যমে ছাত্র-জনতা ঢাকার দেয়ালে দেয়ালে তাদের আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে মূলত কেমন সংবিধান তারা চান, সেটা জানিয়ে দিয়েছেন বলে মনে করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন যে সংবিধানের কথা বলছি, সেই সংবিধান তো বাংলাদেশের দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়ে গেছে। দেশের মানুষ কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান, তা গ্রাফিতির মাধ্যমে দেয়ালে দেয়ালে তুলে ধরেছেন তরুণরা।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কারফিউ এবং অন্যান্য কারণে যখন মানুষ রাস্তায় নামতে পারছিলেন না, সেই সময়টাতেই গ্রাফিতির মাধ্যমে মানুষ তাদের কথাগুলো ছড়িয়ে দিয়েছে দেয়ালে দেয়ালে। বাংলাদেশের প্রতিটি দেয়াল এ অভ্যুত্থানের সাক্ষী। এ কথাগুলো আমরা সংরক্ষিত রাখবো এবং এর মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশের মর্মকথা বেরিয়ে আসবে।
‘প্রজন্ম শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমি’ ও সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা জানান, ২৫ হাজারের বেশি গ্রাফিতির সংগ্রহ নিয়ে এ প্রদর্শনী হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই স্নিগ্ধসহ শহীদ পরিবার ও অভ্যুত্থানে আহতরা উপস্থিত ছিলেন।
আমার বার্তা/এমই