সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এম. আই. ফারুকীর ইন্তেকালে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রোববার (৪ মে) সুপ্রিম কোর্টে বিচারিক কার্যক্রম আংশিকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন পাওয়া সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আজকের শুনানি হচ্ছে না।
রোববার (৪ মে) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এদিন আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের সকল বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, বিচারপতি এম. আই. ফারুকীর (সিনিয়র আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট রোল নম্বর-৭) মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। তার সম্মানে এবং প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এই কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
শুনানি হচ্ছে না জানিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, এখনো যতটুকু জানি, আজকে হয়তো শুনানি বসবে না। আজ না বসলে আগামীকাল (সোমবার) বসতে পারে।
এদিকে, জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আদালতের প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিচারপ্রার্থী ও কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
বেলা ১১টার দিকে ‘ছাত্রসমাজ’ আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে আইনজীবী আলিফ হত্যার বিচার ও চিন্ময়ের ফাঁসির দাবি জানান।
এর আগে, গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে শুনানি হবে ৪ মে চেম্বার আদালতে।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোববার শুনানি হবে। শুনানি আজকে হয় নাই, আদালত রোববার শুনবে এটা।’
উল্লেখ্য, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। ওই সমাবেশের পর ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ছাড়াও আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।
২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় গত ২৫ নভেম্বর তাকে ঢাকায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়। গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী।
গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও বিচারপতি আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ চিন্ময় দাসের জামিন মঞ্জুর করে রুল যথাযথ ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানির জন্য ৪ মে দিন ধার্য হয়।
আমার বার্তা/জেএইচ