বিশ্বের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও এখন দেখা দিচ্ছে নতুন ধরনের সাইবার হুমকি। প্রতারকরা ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস ভাঙতে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য সাইটে— যেমন অ্যাপল, পেপাল, নেটফ্লিক্স, মাইক্রোসফট এবং ফেসবুক। এসব সাইটে ভুয়া ফোন নাম্বার দেখিয়ে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করে সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষণ সংস্থা টেকরাডার ও ম্যালওয়্যারবাইটস।
এই নতুন কৌশলে হ্যাকাররা কোনো ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করছে না। বরং সঠিক ওয়েবসাইটে বিশেষ ইউআরএল বা লিংকের মাধ্যমে ভুল নাম্বার দেখাচ্ছে। ব্যবহারকারী যখন সার্চ ইঞ্জিনে যেমন- Apple Support Number বা Netflix Help Center খুঁজে গুগল অ্যাডে ক্লিক করে, তখন তাকে ওয়েবসাইটে নেওয়া হয়। কিন্তু সেই পৃষ্ঠায় Contact Us সেকশনে থাকে প্রতারকদের দেওয়া ফোন নম্বর।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ওয়েবসাইটের ঠিকানা বা ডোমেইন হুবহু আসল থাকলেও হেল্পলাইনের নাম্বারটি থাকে ভুয়া। এতে করে সাধারণ ব্যবহারকারীরা বুঝতে না পেরে সরাসরি ফোন করে বসেন সেই নম্বরে।
যখন কেউ সেই নম্বরে ফোন করে, তখন অপর প্রান্তে থাকা প্রতারক নিজেকে পরিচয় দেয় অ্যাপল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট বা অন্য কোনো বড় প্রতিষ্ঠানের টেকনিক্যাল সহায়তাকর্মী হিসেবে। প্রথমেই ব্যবহারকারীর আইডি, লগইন তথ্য, ব্যাংক কার্ডের নম্বর, ওটিপি বা কখনো কখনো রিমোট এক্সেস চাওয়া হয়। কেউ কেউ তো ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে রিমোট অ্যাপের মাধ্যমে ঢুকে পড়ে। এর ফলে—
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শুধু অ্যাপল বা পেপাল নয়, এইচপি, ব্যাংক অব আমেরিকা ও শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংক ও টেক কোম্পানির ওয়েবসাইটেও এমন ভুয়া নাম্বার দেখা গেছে।
ভুল নম্বর চিনবেন কীভাবে? থাকুন সতর্ক।
প্রতারণার এই নতুন কৌশলটিকে বলা হচ্ছে Tech Support Scam — অর্থাৎ প্রযুক্তিগত সহায়তার নাম করে ব্যবহারকারীকে প্রতারণা। এফবিআই-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই টেক সাপোর্ট স্ক্যামের মাধ্যমে ১.২ বিলিয়ন ডলার চুরি হয়েছে, যার বেশিরভাগ ভুক্তভোগী ছিলেন ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী।
গ্লোবাল সাইবার অপরাধের একটি বড় অংশ এখন এই ধরনের প্রতারণা কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট বারবার পরীক্ষা করে ভুয়া নম্বর রোধের চেষ্টা করছে, তবে হ্যাকারদের কৌশল প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে।
আমার বার্তা/এল/এমই