ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলা থেকে আসা মাদকবাহী একটি নৌকায় হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।
মঙ্গলবার এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। এটি দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পর প্রথম বড় সামরিক অভিযান বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মাত্র কয়েক মিনিট আগে একটি নৌকা ধ্বংস করেছি, যা মাদক বহন করছিল। সেই নৌকায় প্রচুর মাদক ছিল। আরও আসছে… এগুলো ভেনেজুয়েলা থেকে আসছে।’
পরে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ফুটেজে দেখা যায়, সাগরে একটি স্পিডবোট বিস্ফোরণে আগুনে জ্বলছে। ট্রাম্প বলেন, এই হামলায় ১১ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। কোনো মার্কিন সেনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
তিনি দাবি করেন, নিহতরা ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত অপরাধীরা গ্যাং ট্রেন দে আরাগুয়া-এর সদস্য। এই সংগঠনটিকে যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ট্রাম্প আবারও অভিযোগ তোলে বলেন, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো গোপনে এ গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করছেন। তবে কারাকাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভেনেজুয়েলার যোগাযোগ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, পেন্টাগনও হামলার বিস্তারিত অর্থাৎ কী ধরনের মাদক ছিল, কত পরিমাণ পাওয়া গেছে, বা কীভাবে হামলা চালানো হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেনি।
এই অভিযানে সন্দেহভাজন নৌকাকে দখল বা ক্রুদের গ্রেফতার না করে সরাসরি ধ্বংস করা অস্বাভাবিক বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এটি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কৌশলের সঙ্গেও তুলনা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি মাদকচক্র দমনে ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ ও একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করেছে। এ বহরে ৪ হাজার ৫০০-এর বেশি নৌসেনা ও মেরিন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউএসএস সান আন্তোনিও, ইউএসএস ইও জিমা এবং ইউএসএস ফোর্ট লডারডেল হেলিকপ্টার এবং টমাহক মিসাইল বহন করতে সক্ষম।
মাদুরোকে একাধিকবার লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগে ভেনেজুয়েলায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর গ্রেপ্তারের তথ্যের জন্য পুরস্কার দ্বিগুণ করে ৫ কোটি ডলার ঘোষণা করেছে। তবে ভেনেজুয়েলার কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সালে এক কারাগার অভিযানে তারা ট্রেন দে আরাগুয়া-কে ভেঙে দিয়েছে। বর্তমানে সংগঠনটি আর সক্রিয় নয়।
আমার বার্তা/জেএইচ