জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলা এবং তার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের পর দুই মাসে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনির।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ফ্লোরিডায় শিল্পপতি আদনান আসাদের দেওয়া নৈশভোজে মুনির বলেছেন, “আমরা পরমাণু শক্তিধর দেশ। আমাদের যদি মনে হয়, আমরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি, তাহলে অর্ধেক পৃথিবীকে নিয়ে ধ্বংস হব।”
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে মুনিরের ভাষণের কিছু অংশ প্রকাশ করে। সেখানে 'পরমাণু শক্তিধর' কথাটি নেই।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রে সফররত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের একটি বিবৃতি দেখেছি। পরমাণু শক্তি নিয়ে হইচই করাই হলো পাকিস্তানের চালিকাশক্তি। পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেদের সিদ্ধান্তে আসতে পারে। কিন্তু একটি দেশের পারমাণবিক কমান্ড ও কন্ট্রোল নিয়ে যে সংশয় ছিল, তা আরো জোরালো হচ্ছে এবং এই দেশের সেনা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলে।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, '“আরো দুঃখজনক বিষয় হলো, বন্ধু তৃতীয় দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে মুনির এই কথা বলেছেন। ভারত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারা কোনো পরমাণু-ব্ল্যাকমেলের কাছে নতিস্বীকার করবে না। ভারত তার জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।”
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
ভারতের এই বিবৃতির পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছে, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে অপরিণত মন্তব্য করেছে, তা পাকিস্তান কড়াভাবে খারিজ করে দিচ্ছে। ভারত অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিবৃতি ও তথ্য বিকৃত করেছে। ভারত একটা পরমাণু ব্ল্যাকমেলের ন্যারেটিভ তৈরি করেছে, যা বিভ্রান্তিকর। ভারত ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক অভিযোগ করছে।''
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তান দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তিধর দেশ এবং তাদের পরমাণু কম্যান্ড ও কন্ট্রোল বেসামরিক সরকারের কাছে আছে। তারা এই বিষয়ে সবসময় শৃঙ্খলা ও সংযম দেখিয়েছে।''
“পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদবিরোধী যে পদক্ষেপ নিয়েছে, গোটা বিশ্ব তা স্বীকার করেছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই করছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনোরকম তথ্য ছাড়াই আমাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ করছে”, বিবৃতিতে বলেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।