রোদ থেকে ত্বক রক্ষার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেমন জরুরি বা চোখের জন্য ব্লু-লাইট চশমা পরা, তেমনি কানের জন্য কেন কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই? অথচ শ্রবণশক্তি নষ্ট হলে কিন্তু তা আর ফেরানো যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য-বিষয়ক লেখক কেটি ম্যাগুয়ার ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “ইয়ারপ্লাগ হতে পারে সেই অজানা অথচ জরুরি স্বাস্থ্যসঙ্গী, যেটিকে এখনও গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়নি।”
কেটি ম্যাগুয়ার নিজেই ছোটবেলা থেকে কানের সমস্যায় ভুগেছেন। বারবার কানে সংক্রমণ হওয়ার কারণে প্রায়ই চিকিৎসকের কাছে যেতে হত।
বড় হওয়ার পরও তিনি খেয়াল করেন, সমবয়সীদের তুলনায় তার শ্রবণশক্তি কিছুটা দুর্বল। যদিও সেটা ততটা বোঝা যায় না। তবে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি যে জমা হচ্ছে তা তিনি বুঝতে পেরেছেন।
একটি কনসার্টে গিয়ে প্রথমবার তিনি ব্যবহার করেন আধুনিক নকশার ‘লুপ ইয়ারপ্লাগস’। তখনই উপলব্ধি করেন, কানে বাজনা না ঢুকেও গান শোনা যায় পরিষ্কারভাবে, কথোপকথন হয় স্বাভাবিকভাবে, আর পরদিন কানে সমস্যাও হয় না।
লুপ ইয়ারপ্লাগ কী এবং কেন দরকার?
অনেকের কাছে ইয়ারপ্লাগ মানেই সস্তা, উজ্জ্বল রংয়ের ফোম। কিন্তু আধুনিক ইয়ারপ্লাগ একেবারেই আলাদা।
এমন অনেক ইয়ারপ্লাগস আছে যা বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে লাইভ কনসার্ট বা উচ্চ শব্দযুক্ত পরিবেশের জন্য। এটি প্রায় ১৭ ডেসিবেল শব্দ কমিয়ে আনে, তবে গানের স্বর বা বাদ্যযন্ত্রের স্বাভাবিকতা নষ্ট করে না।
অর্থাৎ পুরো পরিবেশ উপভোগ করা যায়, কিন্তু কানের ক্ষতি না করে।
শ্রবণ বিশেষজ্ঞরা বলেন, “মানুষের কান আসলে দীর্ঘসময় ধরে উচ্চ শব্দ সহ্য করতে পারে না। একবার কানের ভেতরের সূক্ষ্ম স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা আর ফেরানো সম্ভব নয়। আর এই ক্ষতি ধীরে ধীরে হতে থাকে। তাই প্রতিরোধই একমাত্র উপায়।”
যে কারণে ইয়ারপ্লাগ ব্যবহার করা অভ্যাস হওয়া উচিত:
শ্রবণশক্তি রক্ষা
আমরা যেমন অন্ধত্বকে ভয় পাই, তেমনভাবে শ্রবণশক্তি হারানোও জীবনে বড় প্রভাব ফেলে। ইয়ারপ্লাগ ব্যবহার করলে কানে অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে না।
সঙ্গীত উপভোগের সুযোগ
অনেকে মনে করেন ইয়ারপ্লাগ দিলে গান স্পষ্ট শোনা যায় না।
তবে কেটি ম্যাগুয়ার বলেন, “তার অভিজ্ঞতায় গান বরং আরও পরিষ্কার শোনা গেছে এবং মাথা ভারি লাগেনি।“
ফ্যাশনের অংশ
আগে ইয়ারপ্লাগকে অনেকে বেমানান ভাবতেন। তবে আধুনিক নকশার ‘লুপ ইয়ারপ্লাগ’ দেখতে স্টাইলিশ, বিভিন্ন রংয়ে পাওয়া যায়, এমনকি পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা যায়।
সহজ বহনযোগ্য
ছোট একটি কেসে রাখা যায় বলে সবসময় সঙ্গে রাখা সম্ভব। ব্যাগে রেখে দিলেও জায়গা নেয় না।
দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ
চোখ বা ত্বকের মতো কানও যত্ন চায়। অল্প টাকায় কেনা এই সরঞ্জাম ভবিষ্যতের বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে।
আমার বার্তা/এল/এমই