বাংলাদেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এটাকে কাজে লাগাতে সামগ্রিক শিল্প কাঠামো বহুমুখীকরণের পাশাপাশি সরকারি সেবা প্রদানে দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন। আজ মঙ্গলবার ডিসিসিআই গুলশান সেন্টারে এ বৈঠক হয়।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগের বিদ্যমান সুবিধাগুলো বিবেচনায় নিয়ে জাপানের উদ্যোক্তারা এ দেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন বলে আশা করছি।’
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের দক্ষ মানবসম্পদের তাঁর দেশে কর্মসংস্থানের ভালো সুযোগ রয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অধিকতর সম্প্রসারণে দুই দেশের মধ্যকার ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষরের লক্ষ্যে সপ্তম সভা সম্প্রতি টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রয়োজনীয় সংলাপের মাধ্যমে দ্রুত এটি স্বাক্ষরিত হবে, যা দুই দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ২০২৪ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩.১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১.৮১ বিলিয়ন ও ১.৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশের রপ্তানির পণ্যের জন্য জাপান ১২তম বৃহত্তম বাজার।
বৈঠকে তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিশেষ করে অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জাপানের সহযোগিতা অনস্বীকার্য। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘদিনের। জাপানের উদ্যোক্তারা সার, নির্মাণ, টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম প্রভৃতি খাতে ইতিমধ্যে ৫০৭.১৪ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছেন। যদিও জাপানের মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ১৮৪.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ প্রদত্ত নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে তাঁদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া বাংলাদেশের অটোমোবাইল, মেশিনারি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি লজিস্টিক, পাট ও পাদুকা, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে জাপানের কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তার ওপর জোরারোপ করেন তাসকীন আহমেদ।
বিশেষ করে বাংলাদেশের এসএমই খাতের সক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে জাপানের সহযোগিতার আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহসভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আমার বার্তা/এমই