পোশাক শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিজিএমইএ কার্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সাভার এরিয়ার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. মঈন খান এবং বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বাধীন বোর্ড সদস্যরা।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সংকটকালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনীর সময়োপযোগী সহায়তার কারণেই পোশাক শিল্প বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে। তিনি সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও শিল্পের পাশে থাকার অনুরোধ জানান।
আলোচনায় উঠে আসে—পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক ও আইন-বহির্ভূত দাবির কারণে হঠাৎ উৎপাদন বন্ধ, ভাংচুর, রাস্তা অবরোধসহ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডের প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এ ছাড়া ‘ঝুট সন্ত্রাস’ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন উদ্যোক্তারা। অভিযোগ করা হয়, ঝুট সেক্টরে আধিপত্য কায়েমে কিশোর গ্যাং ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করছে।
মেজর জেনারেল মঈন খান বলেন, “অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে গার্মেন্টস শিল্পের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তবে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো না সমাধান করলে বাহ্যিক নিরাপত্তা কার্যকর হবে না।” তিনি জানান, সেনাবাহিনী একটি ‘সিকিউরিটি মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরি করছে এবং ঝুট সমস্যার টেকসই সমাধানে ‘অকশন হাউজ’ গড়ার ভাবনা রয়েছে।
তিনি বিজিএমইএ’র প্রতি অনুরোধ জানান, বেতন-ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ নিশ্চিত করতে মালিকদের সচেতন করা হোক এবং যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী শিল্পের পাশে থাকবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান (বাবলু), সহ-সভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, মো. শিহাব উদ্দিন চৌধুরী, পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরীসহ শিল্প উদ্যোক্তারা। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কমান্ডার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরাও সভায় অংশ নেন।
সভায় একটি শ্রমিক কনফেডারেশন গঠনের সম্ভাবনাও আলোচনা হয়, যা ভবিষ্যতে শিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন অংশগ্রহণকারীরা।
আমার বার্তা/এমই