শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবু সিদ্দিক ঢালী নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার এবং ভোজেশ্বর ইউনিয়নবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে আবু সিদ্দিক ঢালী হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানানো হয়। এছাড়া দুই আসামি গ্রেফতার হলেও অন্য আসামি প্রকাশ্যে ঘুরছেন বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।
মানববন্ধনে আশা ওই এলাকার এক নারী বলেন, ‘সন্তান জন্ম নিলে হিজড়াদের এলাকায় খবর দিয়ে এনে তাদের দিয়ে জোর জবরদস্তি ১০ হাজার টাকা করে ওঠায়, তারও ভাগ নেয়। এভাবেও ওরা চাঁদাবাজি করে। আবার শুধু বাড়ি বানানো নয়, বাথরুম উঠালেও দিতে হয় চাঁদা।’
নিহত আবু সিদ্দিক ঢালীর ছেলে রাজীব ঢালী বলেন, ‘আমার কাকা বাড়ি তুলছে সেখানে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চায় স্থানীয় চাঁদাবাজরা। সে বিষয়ে আমার বাবা প্রতিবাদ করলে আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার বাবা কোনো অপরাধ করেননি। তাকে যেভাবে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই, যারা আমার বাবাকে খুন করেছে, তাদের ফাঁসি হোক। পুলিশ এখন পর্যন্ত মাত্র দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু বাকিরা দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে—এটা কীভাবে সম্ভব? প্রশাসন কী করছে, আমরা জানি না। আমরা শুধু সুবিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
নিহতের বড় ভাই আবু আলেম ঢালী বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজও আমরা সেই দিনের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারিনি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মামলায় ৪৩ জনের নাম থাকার পরও মাত্র দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই, বাকি আসামিরা কেন এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে! প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন সব আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা শুধু বিচার নয়, খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসি চাই।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আমরা ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে এদের অনেকেই উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।’
উল্লেখ, ১২ জুন রাতে ভোজেশ্বর চান্দনি নদীর পাড় থেকে বাড়িতে আসার সময় মন্নাফ ছৈয়ালের বাড়ির সামনের পাকা রাস্তায় কুপিয়ে আহত করা হয় আবু সিদ্দিক ঢালীকে। পরেরদিন সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এঘটনায় স্থানীয় মিন্টু ছৈয়ালকে প্রধান আসামী করে ৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জুন নড়িয়া থানার একটি মামলা করেন নিহতর বড় ভাই আবু আলেম ঢালী।
আমার বার্তা/এল/এমই