শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছেন সান্তাহারের লেপ তোশকের কারিগররা 

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২২, ১৮:০১ | অনলাইন সংস্করণ

  রাকিবুল হাসান , আদমদিঘী(বগুড়া) প্রতিনিধি:

কাজের মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন লেপ-তোষক কারিগররা। ছবি: আমার বার্তা।

ভোরের স্নিগ্ধ শিশিরবিন্দু আর ঠান্ডা হাওয়ায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ভোরের শিশির এবং  সন্ধ্যার কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরসহ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামেও। ফলে শীতের ঠান্ডাকে মোকাবিলার জন্য সান্তাহার শহর ও আশপাশের গ্রামে আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে মানুষজন । এতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে লেপ-তোশকের দোকানে। যে কারণে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশকের কারিগরদের।

শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে আদমদিঘী উপজেলায় বিভিন্ন লেপ-তোশক তৈরীর কারিগরদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সান্তাহার শহরের লেপ-তোশক তৈরির দোকানগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। বছরের অন্যান্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীতের আগমন থেকে শুরু হয় তাদের ব্যবসায়ীক মৌসুম। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কিছুটা কম হওয়ায় চাহিদা বেশি। 

রবিবার দুপুরে সরজমিনে সান্তাহার  শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায় শীতকে সামনে রেখে চলছে এমন প্রস্তুতি। তবে শহর ঘুরে দেখা যায় পোশাক মার্কেটে শীতের গরম কাপড় কেনার কোন ক্রেতা। পোষাক দোকানীরা বলছে, শীতের গরম কাপড় বেচা-কেনা শুরু হয় একটু দেড়িতে। শীতের গরম কাপড়ের তেমন চাহিদা না থাকলেও তুলা বাজারে শুরু হয়েছে তুলার বেচা-কেনা আর লেপ তৈরির ধুম। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী হরেক রকমের তুলা দিয়ে তৈরি করছেন ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের লেপ।

লেপ তৈরির কারিগররা বলছেন শীতের তীব্রতা শুরু হলে লেপ তৈরির ব্যস্ততা আরো বেড়ে যাবে। প্রতি বছরের এ সময়টায় আমাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। 

জানতে চাইলে সান্তাহার রেলওয়ে টিকেট কাউন্টার এর দোগাছী বেডিং স্টোর লেপ তৈরির জামান ইসলাম জানান, বড় আকারের লেপ তৈরির মজুরী ৩৫০টাকা আর মাঝারি আকারের লেপ তৈরির মজুরী ২০০টাকা। তুলা, কাপড়, কভার এবং মজুরীসহ একটি বড় লেপ তৈরিতে মোট খরচ পড়ে ২ হাজার ৫০০টাকা। আর মাঝারী আকারের লেপে মোট খরচ পড়ে ১ হাজার ৫০০টাকা। এখন তারা সারাদিনে ৭-৮টি লেপ তৈরি করেন। 

তিনি আরো বলেন, ভালো মানের তুলা ২৫০টাকা প্রতি কেজি। আর গার্মেন্টেস এর বিভিন্ন রকমের তুলা ৫০-১০০টাকা প্রতি কেজি। ১টি বড় লেপ তৈরি করতে ৪ কেজি তুলার প্রয়োজন হয়। আর মাঝারী আকারের লেপে আড়াই কেজি তুলা লাগে। বড় আকারের লেপে ১০ গজ লাল কাপড়ের প্রয়োজন হয়। আর বেশিরভাগ লেপ লাল কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। 

লেপ তৈরি করতে আসা শহরের হাটখোলা  এলাকার মোহাম্মদ আলী  বলেন, বাড়িতে যে লেপ আছে তা দিয়ে আগের লোকসংখ্যার চাহিদা পূরণ হয়েছে।  শীত শুরুর আগে-ভাগেই পছন্দমত লেপ তৈরি করে নিচ্ছি। 

তুলা ব্যাবসায়ি মজিদ বলেন, এখন শীতের কাজ পুরোদমে শুরু হয়নি। শীতের প্রভাব এখনো তেমন পড়েনি। তবে শীতের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য লোকজন আগাম লেপ তৈরি করছেন। আরো কয়েকদিন পর কাজ-কাম বেশি হবে। আমার দোকানে কারপাল, উল, কাপাস, শিমুল ও গার্মেন্টেস এর কালার জাতের তুলা রয়েছে। 

ব্যবসায়ীরা আরো জানান, শীতের শুরু থেকে অন্তত ৪টি মাস লেপ-তোশক বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। এ সময় সবচেয়ে বেশি লেপ বিক্রি হয়ে থাকে। যে কারণে চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেপ সেলাই কর্মীদের সংখ্যাও বাড়াতে হয়।


এবি/এপি