আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী অবকাঠামো পুনর্বাসনের কাজ চলমান
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯:১৬ | অনলাইন সংস্করণ
অনক আলী হোসেন শাহিদী:

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর অন্যতম উন্নয়ন প্রকল্প- ঘূর্ণিঝড় অম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী অবকাঠামো পূণর্বাসন প্রকল্পের কাজ অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২০২০ সালের ১লা অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজের মেয়াদ থাকলেও কাজ বাস্তবায়নের বাস্তবতায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক এবং ব্রীজ কালভার্ট পূর্ণবার্সনের মাধ্যমে পল্লী সড়ক সংযোগ ব্যবস্থা সংরক্ষন টেকসই সড়ক রক্ষনাবেক্ষনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয় করার মাধ্যমে কৃষক উৎপাদিত সহ বিভিন্ন পণ্যাদির বাজারজাত ব্যবস্থা সহজীকরণের মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এর লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল। এ ছাড়াও সড়ক অবকাঠামো মেরামত ও পূণর্বাসনের মাধ্যমে কৃষি/অকৃষি কর্ম খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সহ গ্রামীন অর্থনীতিকে সচল করার মাধ্যমে সৃমদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে প্রকল্পটির কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী অবকাঠামো পূণর্বাসন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৯ শত ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় ৬২৪০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক পূনর্বাসন, ৪৭৫৫ মিটার ব্রীজ পূণর্বাসন ও পুনঃনির্মান এবং ৮০৪.৭০ মিটার কালভার্ট পূণর্বাসন ও পুনঃনির্মান কার্যক্রম বাস্তবায়িত করা হবে। সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়- এ প্রকল্পে গৃহীত কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৪৫২৯.২৭১ কিলোমিটার গ্রামীন সড়ক পূণর্বাসন, ৪৭৩৯ মিটার ব্রীজ পূণর্বাসন ও পুনঃনির্মান ও ৩৯৮.৮০ মিটার কালভার্ট পূণর্বাসন ও পুনঃনির্মান কার্যক্রম। এ প্রকল্পের মধ্যে শতকরা ১০০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে- ৩০১৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ও পূণর্বাসন ১৬৫০ মিটার ব্রীজ পুণর্বাসন ও পুনঃনির্মান ও ২৪০ মিটার কালভার্ট সামগ্রিক কাজের বাস্তব অগ্রগতি শতকরা ৫৭.১৬ ভাগ। এ উন্নয়ন কাজে অর্থ বরাদ্দ অনুযায়ী ব্যয় করা হয়েছে শতকরা ৫১.০৬ ভাগ টাকা । বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে শতকরা ৫.১০ ভাগ বেশী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কাজের বাস্তবতায় দ্রুত প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী অবকাঠামো পূণর্বাসন প্রকল্পটি দেশের ৮ বিভাগের ৫৫টি জেলার ৩৫৫ টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে- ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পূণর্বাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই উন্নয়ন। যা বাস্তবায়িত হলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষজন উপকৃত হবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক মোঃ রফিকুল হাসান প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে সার্বক্ষনিক সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সাথে যোগাযোগ ও তত্ত্বাবধান করছেন এবং প্রকল্প এলাকা সফর করছেন বলে মাঠ পর্যায়ের সূত্র থেকে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- “প্রকল্পের কাজ মানসম্মতভাবে দ্রুত শেষ করতে যা যা করনীয় তা করার চেষ্টা করছি”।
প্রকল্পিিটর কার্যক্রম সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী গৌতম প্রসাদ চৌধুরী বলেন- “সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কার্যক্রম সন্তোষজনক গতিতে এগিয়ে চলছে। আমি নিয়মিত এ সব উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করছি।” এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকার জেলা পর্যায়ে কর্মরত একাধিক সাংবাদিকরা জানিয়েছেন- ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী অবকাঠামো পূণর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি টেকসই পর্যায়ে পৌছেতে শুরু করেছে”। এই প্রকল্প সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন- “সারা দেশে এলজিইডি দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে আসছে। সংশ্লিষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী অবকাঠামো এলজিইডির সামগ্রিক উন্নয়নের একটি অংশ”।
উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ১৬ মে থেকে শুরু হয়ে ৫ দিন ব্যাপী ঘূর্ণিঝড় আম্পান দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সহ সারা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তার প্রেক্ষাপটে এলজিইডি ২০২০ সালের ১লা অক্টোবর এ প্রকল্পের কাজ শুরু করে।
আমার বার্তা/এমই