উত্তরায় সিকিউরিটি কোম্পানির আড়ালে অভিনব এমএলএম প্রতারণা

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২২, ১৫:০৮ | অনলাইন সংস্করণ

  শুকতারা ইসলাম ঐশী

সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানিগুলোকে একটি নীতিমালার মধ্যে আনার প্রচেষ্টা সরকার চালালেও বেশিরভাগ সিকিউরিটি কোম্পানি এর কোন তোয়াক্কা না করেই তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। নেয়া হচ্ছে না পুলিশ ভেরিফিকেশনের কোন ছাড়পত্র। 

এছাড়াও বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানি খোলার ক্ষেত্রে লাইসেন্স ইস্যু করতে জেলার ক্ষেত্রে জেলা ভিত্তিক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কোম্পানিগুলো তা না করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে তুলছে সিকিউরিটি কোম্পানির আড়ালে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের চক্র।

রাজধানী উত্তরার দক্ষিণখানে ট্রান্সমিটার নামক এলাকা ও ৯ নং সেক্টর সোনারগাঁও জনপথ রোডের একটি ভবনে সিকিউরিটি কোম্পানির আড়ালে লোভনীয় অফারে অভিনব এমএলএম ব্যবসার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া এরকম দুটি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান মিলেছে। 

জানা যায়, র‍্যাপিড সেইফ সিকিউরিটির এমডি স্বপন ও সুপার স্মার্ট সিকিউরিটির চেয়ারম্যান আরজু খানের পরিচালনায় দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

সরেজমিনে গিয়ে আরো জানা যায়, চাকুরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে চাকরির শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের জামানত গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

প্রতিটি সদস্যদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ভর্তি ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা সহ সদস্যের লেভেল অনুযায়ী ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৫-৩০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠান দুটি। 

এছাড়াও ১৫-৩০ হাজার টাকা জামানত দেয়া মার্কেটিং অফিসারদের দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লোভনীয় বেতনের অফারে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।  আর এসব মার্কেটিং অফিসাররা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যত বেশি লোকবল সংগ্রহ করে টাকা নিতে পারবে তার তত বেশি কমিশন দেয়া হবে বলে প্রভাবিত করা হয়ে থাকে। অথচ এসব মার্কেটিং অফিসারদের নিজেদের অনেকেরই নেই কোম্পানির কোন আইডি কার্ড। নেই কোন ট্রেনিং এর ব্যবস্থা। এমনকি কোম্পানি কোথায় কোথায় সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দিয়েছে তারও কোন সদুত্তর দিতে পারেনি তারা।

এছাড়াও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ছবি টাঙিয়ে এবং স্থানীয় কাউন্সিলর ও ছাত্রলীগের এক নেতার নাম ব্যবহার করে দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠান দুটি। 

আরো জানা যায়, কিছুদিন আগে র‍্যাব ৪ এর অভিযানে বি এলার্ট নামক সিকিউরিটি কোম্পানির বেশ কিছু অসাধু কর্মকর্তা আটক হয়। পরবর্তীতে তারা জামিনে বের হয়ে আলাদা আলাদা নামে এইসব সিকিউরিটি কোম্পানির সৃষ্টি করে।

এমনকি র‍্যার ৪ এর অভিযানে আটক হওয়া কতিপয় ব্যক্তি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করা সহ প্রতিবেদনটি না করার জন্য প্রতিবেদককে বিভিন্ন উপায়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে।

এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তরা জোনের ডিসি মোরশেদ আলম প্রতিবেদককে বলেন, কিছুদিন আগে এরকম একটি সিকিউরিটি কোম্পানির নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং অভিযোগ পেলে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবি/প্রিন্স