দীর্ঘদিন পর রাজনৈতিক সমাবেশে আসছেন প্রধানমন্ত্রী

সরকারবিরোধীদের আতঙ্ক ধরাতে চায় যুবলীগ

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ১৯:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  বিশেষ প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ফাইল ছবি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের শক্তির জানান দেবার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। 

আগামী ১১ নভেম্বর সংগঠনটির সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় যুবসমাবেশ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মহাযুবসমাবেশের মাধ্যমে সরকার বিরোধীদের নিজেদের শক্তির জানান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামশ পরশ। সারাদেশ হতে অন্তত ১০ লাখ যুবকের সমাগম ঘটাবে যুবলীগ। ইতোমধ্যে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল প্রস্তুত করা হচ্ছে। গৌরবের প্রতীক পদ্মাসেতুর আদলে তৈরি হচ্ছে মূলমঞ্চ। সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো সাজানো হয়েছে। দলীয় পতাকার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন ও যুবলীগের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরন। 

ওই দিন  মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন  আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা সংকট শুরুর পর পর এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত স্থানে কোন সমাবেশে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। 

স্বাধীনতা লাভের পর দেশে ফিরেই বাঙালি জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার মিশনে নেমে পড়েন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার কারণে বিশাল যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব দেন তৎকালীন বাংলাদেশের যুব রাজনীতির আলোকবর্তিকা শেখ ফজলুল হক মনিকে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের।

আগামী ১১ নভেম্বর সুবর্ণজয়ন্তীতে পা রাখবে যুবলীগ। সুবর্ণজয়ন্তীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশ এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্ণিল সাজে সাজানোর প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল বিকেলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। এর আগে সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

তথ্য মতে, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও অধিক সংখ্যায় অংশ নিচ্ছে। বিএনপির নেতারাও সমাবেশগুলোতে নেতাকর্মীদের শোডাউন করে নিজেদের শক্তি জানান দেয়ার কৌশল হিসেবে নিয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও  খুলনার গণসমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখেপড়ার মতো।

গত ২৯ অক্টোবর দলটি রংপুর শহরে রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ করে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে রাজপথ নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া বিএনপি। কিন্তু  তার আগেই নিজেদের শক্তির জানান দিয়ে বরাবরের মতো এবারো রাজপথ এবং দেশের রাজনীতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা। 

সরকার বিরোধীদের মনে আতঙ্ক ধরাকে সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে যুবলীগ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সারা দেশের পাশাপাশি ঢাকায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ১১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসবেশের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিন পর ঢাকায় নিজেদের শক্তির জানান দেবে যুবলীগ। ওই দিন দেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা থেকে শুরু করে গ্রাম থেকেও নেতাকর্মীরা  যুব মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন।

এ ব্যাপারে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, ‘রাজপথ কাদের, তা আগামী ১১ নভেম্বর দেখিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, লাশ ফেলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায়। ওদের নৈরাজ্যের জবাব যুবলীগ একলাই দিতে পারে, তা প্রমাণ করব ইনশাআল্লাহ।’ 

এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। প্রস্তুতি সভা হচ্ছে দেশের সব জেলা-উপজেলায়। সমাবেশ সফল করার  জন্য যুবলীগের পক্ষ থেকে ১০টি উপকমিটি করা হয়েছে। উপকমিটির সদস্যরা নিয়মিত সভা করে মহাসমাবেশে সফল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, যুব সম্প্রদায়ই আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশকে তুলে ধরবে। সে হিসেবে ১১ নভেম্বর আবারো প্রমাণিত হবে দেশের যুবকরা আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছে, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে। তারা আগুন সন্ত্রাস চায় না, মানুষ হত্যার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। 

এবি/প্রিন্স