পাপ ও দেশের বিপর্যয়

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২৭ | অনলাইন সংস্করণ

  মুফতি নাজমুল হাসান সাকিব

ইসলাম চির শান্তির ধর্ম। মানবতার ধর্ম। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে এর যথেষ্ট ভূমিকা। তাই ইসলাম সব সময় একটি পূণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। এতে রয়েছে মানুষের সার্বিক বিষয়ের দিকনিদের্শনা ও সব সমস্যার সমাধান। আর মহাগ্রন্থ আল কোরআন হলো ইসলামী জীবন ব্যবস্থার সংবিধান। আজ আমরা এ থেকে সরে যাওয়ার কারণেই মূলত দেশে নানা বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরূণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সূরা আর-রূম : আয়াত ৪১)।
অর্থাৎ-স্থলে, জলে তথা সারা বিশে^ মানুষের কুকর্মের কারণে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। তাফসিরে রূহুল মাআনীতে বলা হয়েছে- ‘বিপর্যয় বলে দুভিক্ষ, মহামারী, অগ্নিকা-, পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনাবলীর প্রাচুর্য, সব কিছু থেকে বরকত ওঠে যাওয়া ইত্যাদি বিপদ-আপদ বোঝানো হয়েছে। আয়াত থেকে জানা গেল যে, পার্থিব বিপর্যয়ের কারণ মানুষের গুনাহ ও কুকর্ম। তন্মধ্যে শিরক ও কুফর সবচাইতে মারত্মক। অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদেরকে যেসব বিপদাপদ স্পর্শ করে, সেগুলো তোমাদেরই কৃতকর্মের কারণে। অনেক গুনাহ তো আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।’ (সূরা আশ-শূরা : আয়াত ৩০)। উদ্দেশ্য এই যে, দুনিয়ায় বিপদাপদের সত্যিকার কারণ তোমাদের গুনাহ। যদিও দুনিয়াতে এসব গুনাহের পরিপূর্ণ প্রতিফল দেওয়া হয় না। অর্থাৎ- প্রত্যেক গুনাহের কারণেই বিপদ আসে না; বরং অনেক গুনাহই ক্ষমা করা হয়।
বর্তমান সমাজ যেভাবে গুনাগের সাগরে ডুবে আছে, এ থেকে অতিদ্রুত ফিরে না এলে না-জানি আরও বড় কোনো বিপর্যয় কখন নেমে আসে। অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নাচ-গান, সুদের আদান-প্রদান, দুর্নীতি, সামাজিক কলহ, যিনা-ব্যভিচার ইত্যাদি। অশ্লীলতার শেষ নেই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! যে ব্যক্তির পায়ে কোনো কাঠের আঁচাড় লাগে অথবা কোনো শিরা ধড়ফড় করে কিংবা পা পিছলে যায়, তা সবই গুনাহের কারণে হয়ে থাকে।’ (তাফসিরে মাআরেফুল কুরআন)। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। পবিত্র জীবন-যাপনের মমাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতের অনাবিল সুখ আর শান্তি দান করুন। আমিন।
লেখক : মুহাদ্দিস, রিয়াজুল জান্নাহ মহিলা মাদরাসা বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ