ভ্রমণে কীভাবে সালাত পড়বেন

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২০ | অনলাইন সংস্করণ

  মুফতী কাজী সিকান্দার

মহান আল্লাহ তাআলা ভ্রমণের বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো, অতঃপর দেখো, যারা সত্যকে অস্বীকার করেছে তাদের পরিণাম কী হয়েছিল!’ (সূরা আনআম : আয়াত ১১)
আল্লাহ তাআলা সফর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে মানুষ বিভিন্ন নিদর্শন দেখে শিক্ষা অর্জন করতে পারে। সফরের আদবের মধ্যে একটি হলো সফরের জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় এবং সফর থেকে ফেরে দুই রাকাআত নামায পড়া মোস্তাহাব, আর সফরের মধ্যে কোথায় কিছু সময় অবস্থান করার ইচ্ছা করলে তথায় বসার পূর্বে দুই রাকাআত নামায পড়া মোস্তাহাব। এগুলোকে সফরের নামায বলা হয়। সফরের এ নামযগুলোর নিয়মও অন্যান্য নামাযের মতই। নিয়তে শুধু সফরের কথা উল্লেখ করতে হবে।
‘তোমরা যখন যমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাযের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই। (সূরা নিসা : আয়াত ১০) কসর শব্দের শাব্দিক অর্থ- কম করা, কমানো। শরীয়তের পরিভাষায়- মুসাফির চার রাকাআত ফরয নামাযে দুই রাকাআত পড়াকে কসর বলা হয়।
শরীয়তের ভাষায় মুসাফির- কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল (৭৮ কিলোমিটার অন্য মতে ৭৭, ২৩২ কিলোমিটার) দূরে সফর করার নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই তাকে মুসাফির বলা হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫)।
হুকুম- মুসাফির পথিমধ্যে চার রাকআত বিশিষ্ট ফরয নামাযকে দুই রাকআত পড়তে হবে। তিন ও দুই রাকাআত বিশিষ্ট ফরয এবং ওয়াজিব, সুন্নাতের নামাযে কোনো কসর নেই, পূর্ণ নামায পড়তে হবে। গন্তব্যে পৌঁছার পর যদি ১৫ দিনের কম অবস্থান করার নিয়ত করে তবে সে কসর করবে। আর ১৫ বা তার চেয়ে বেশি দিন অবস্থানের নিয়ত করলে কসর করবে না। পরিপূর্ণ নামায আদায় করতে হবে।
নিজ বাড়ি ঘরে মুসাফিরের হুকুম বর্তায় না। পূর্ণনামায পড়তে হবে। তবে একসময় নিজ বাড়ি ঘর ছিল এখন নেই তখন সেখানে মুসাফিরের হুকুম বর্তাবে। মুকীম অর্থা স্থানীয় ইমামের পিছনে নামায পড়লে মুসাফির কসর করবেন না। ইমামের সঙ্গে পরিপূর্ণ সালাত আদায় করবেন।  তবে মুসাফির ইমাম হলে কসর করবেন। আর মুকিমগণ অর্থাৎ স্থানীয় মুসল্লিরা বাকি নামায নিজে নিজে আদায় করবেন। মুসাফির সুন্নাত ছেড়ে দিতে পারবেন। তবে না ছাড়া উত্তম। ব্যস্ততা না থাকলে সুন্নাত পড়ে নেয়া ভালো। চালক ও সহকর্মীরাও পথিমধ্যে কসর করবেন। গন্তব্যে পৌঁছার পর যদি তার নিজ এলাকা হয় বা ১৫ দিন বা তার থেকে বেশি থাকার নিয়ত করে তবে কসর করবেন না। আর যদি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করেন তখন কসর করবেন। ১০ দিনের অবস্থানের নিয়ত করলে এরপর আবার ১০ দিন এভাবে নিয়ত করতে করতে ১৫ দিন থেকে বেশি বা কয়েক মাস অবস্থান করলেও কসরের সালাত আদায় করা যাবে।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, আদ-দ্বীন ইসলাহ মহিলা মাদরাসা, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা