গভীর সংকটে দেশ: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২২, ১৬:০৭ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক :

আজ মঙ্গলবার সাবেক এমপি রুমনা মাহমুদের বাসায় বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: ছবি- আমার বার্তা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ এখন গভীর সংকটে রয়েছে। সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাবেক এমপি রুমনা মাহমুদকে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে তার বাসায় দেখতে যান মির্জা ফখরুল। এরপর সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

ঢাকায় দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ‘সরকারের গভার্নেন্সের চিত্র’ ফুটে উঠেছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ এখন গভীর সংকটে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সর্বত্র ত্রাস সৃষ্টি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘চারদিকে তাকালে চোর, চুরি। চারদিকে তাকালে গুণ্ডামি, চারদিকে তাকালে মারামারি। তারা এত কিছু করছেন, একজন দিনমজুরকে গুলি করে তার নাড়ি-ভুঁড়ি বের করে দিতে পারছেন। আর আপনাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) সামনে দিয়ে জঙ্গি উধাও হয়ে যাচ্ছে। বুঝতেই পারেন তাদের (সরকার) গভার্নেন্স। কোন জায়গায় তারা গভার্নেন্সকে নিয়ে এসেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে একটা গভীর সংকটে পড়ে গেছে, একেবারে খাদে এসে গেছে। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট, আরেক দিকে রাজনৈতিক সংকট। এসবের সমাধান না হলে, এদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। আমরা এখনো মনে করি, এই সমস্ত সন্ত্রাস, অত্যাচার-নির্যাতন বাদ দিয়ে তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং দেশে অন্তর্বর্তীকালীন কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান করার কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখি না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা একটা ক্রিটিক্যাল টাইম মুমেন্ট। যদি নির্বাচন ঠিক মতো না হয়, নির্বাচনে যদি জনপ্রতিনিধি সঠিকভাবে নির্বাচিত না হয়, সে দেশ কিভাবে চলবে? আপনারা পাশের দেশগুলোর দিকে দেখেন। ভারতের কি কম সমস্যা আছে? ভারতে নির্বাচন হচ্ছে, সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। নেপালে একেবারে বিপরীতমুখী রাজনৈতিক দলগুলো, সোশ্যালিস্ট, রেভ্যুলেশনারি, লিবারেল ডেমোক্রেন্সি-ইলেকশন করছে এবং সবাই নির্বাচনে যাচ্ছে। সেখানে নির্বাচনে যাওয়ার পরিবেশ আছে। পাকিস্তানের মতো দেশ- তারা পর্যন্ত নির্বাচনে যাচ্ছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের (রাজনৈতিক দল) বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে। দুর্ভাগ্যজনক আমরা সেটা করতে পারি নাই। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে আওয়ামী লীগ এই সংকট সৃষ্টি করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে শুরু থেকে অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। এর মূল টার্গেটটা হচ্ছে, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও তার স্ত্রী। যেহেতু ২০০৮ সাল টুকু সাহেব নির্বাচন করতে পারেননি, নির্বাচন করেছেন ভাবি। সেজন্য নির্বাচনে জিতে এসেছে। এখানে প্রতিরোধ, প্রতিহিংসার ব্যাপার আছে। আওয়ামী লীগ কোনো মতেই সন্ত্রাস ছাড়া টিকতে পারে না। প্রতিপক্ষকে তারা সহ্য করতে পারে না এবং সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে তারা প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে চায়। ত্রাস না করলে তারা শাসন করতে পারে না- এটা হচ্ছে তাদের পুরোনো অভ্যাস।’

এসময় সন্ত্রাসী হামলার বিবরণ তুলে ধরেন সাবেক সংসদ সদস্য রুমনা মাহমুদ। এদিন রুমনা মাহমুদের স্বামী ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সদস্য শায়রুল কবির খান।

এর আগে গত ১৮ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল রেলস্টেশন বাজার এলাকায় আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় সম্মেলনের লিফলেট বিতরণের এক অনুষ্ঠানে জেলার সভাপতি রুমনা মাহমুদসহ নেতাকর্মীদের ওপরে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় এবং তার গাড়ি ভাঙচুর করে।

এবি/ জিয়া