ই-পেপার বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ইরানের প্রতিশোধ; বড় যুদ্ধের ঝুঁকিতে পৃথিবী

অলোক আচার্য:
১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:১১

অবশেষে ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা করেছে ইসরাইলে। বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের পাশাপাশি এসব হামলা ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়া থেকে করা হয়েছে। লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারাও এ সময় দুই দফা রকেট হামলা করেছে ইসরায়েলে। আল জাজিরা জানিয়েছে, হামলা প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষায় সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জর্ডান। এ কথার মানে হলো- এই হামলায় অন্তত নয়টি দেশ জড়িয়ে পড়েছে। হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি বিমানঘাঁটি ধ্বংসের দাবি করেছে ইরান। তবে ইসরায়েল বলছে, ৯৯ শতাংশ হামলাই তারা প্রতিহত করেছে, আর মাত্র একজন আহত হয়েছে। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছে তবে সেটা কি ধরনের হবে অর্থাৎ আবারও সরাসরি কোনো হামলা বা আক্রমণে যাবে কি না তা নিশ্চিত নয়। যদি সেটাই হয় তবে ইরানও পাল্টা হামলা করবে। আর ইরানের পাল্টা হামলার পরে সেদেশের মানুষ কিন্তু উল্লাস করেছে রাস্তায় নেমে। অর্থাৎ এটা না হলেই বরং সেদেশের শাসক গোষ্ঠী চাপে থাকতো। কিন্তু হামলা-পাল্টা হামলা কি কোনো সমাধান? না বড় কোনো সমস্যার শুরু মাত্র? এই হামলা-পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে যে শঙ্কা ছিল তা সম্ভবত সত্যি হতে যাচ্ছে। অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্য একটি বড় ধরনের যুদ্ধের ঝুঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলও এই হামলার জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে অঙ্গিকার করেছে। কিন্তু সেই জবাব কিভাবে হবে তা নিয়ে এখনও দোটানায় রয়েছে ইসরাইল। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ, ১৯৭৩ সালের ইয়ম কিপ্পুর যুদ্ধ এই তিনটি যুদ্ধের পর এখন আবারও আরব ইসরাইল যুদ্ধ হওয়ার বড় ধরনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এই যুদ্ধ সর্বাত্বক হতে পারে কি না সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন এবং যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের ঘনিষ্ট মিত্র হলেও ইসরাইলের পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সায় নেই।

এতেই বোঝা যায় ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়েছে সেভাবে হয়তো এখন থাকছে না। তাছাড়া ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়ানোরও কোনো ইচ্ছা নেই। সামনেই দেশটির নির্বাচন। এর আগে দেশকে এতগুলো যুদ্ধের ভিতর জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে কোনো ধরনের শত্রুতা বাড়াতে চায় না। তবে তেহরান হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে রক্ষা করা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, আমরা উত্তেজনা চাই না, তবে আমরা ইসরাইলের প্রতিরক্ষা এবং এই অঞ্চলে আমাদের কর্মীদের সুরক্ষায় সমর্থন অব্যাহত রাখব। ইরানের কর্মকাণ্ডকে তিনি নজিরবিহীন উল্লেখ করেন। ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের হামলার পর ইরান এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এবং ধারণা করা হচ্ছে ইসরাইলে এই হামলা সেই হামলারই প্রতি জবাব। এই আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ বিশ্ব কোনোভাবেই একটি বড় যুদ্ধ গ্রহণ করার মত যথেষ্ট প্রস্তুত নয়। বিশেষ করে গাজা যুদ্ধের ছয় মাসের মাথায় এমন অবস্থা বিশ্বের পরাশক্তিধর দেশগুলোকে ভাবিয়ে তুলেছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইরানের কনস্যুলেট ভবন ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েল। তবে যদি আরেকটি যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হয় বা ইরানের সাথে সামরিক সংঘাতে রুপ নেয় তাহলে মধ্যপ্রাচ্য অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে। কারণ যুদ্ধ শুধুমাত্র ইরান আর ইসরাইলের মধ্যেই থেমে থাকবে না। এটি আরও বিস্তৃত হবে। ফলে সংঘাতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ইরান-ইরসাইল। আর এই যুদ্ধ শুরু হলে তা হবে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভয়াবহ সতর্কবার্তা। এমনিতেই মধ্যপ্রাচ্য গতে কয়েক বছর ধরেই বেশ উত্তপ্ত হয়ে আছে। এর মধ্যেই ইরসাইল ফিলিস্তিনে হামলা চালালে পরিস্থিতি বদলে যেতে থাকে।

ইরানের হামলা মোকাবিলায় এরইমধ্যে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। পাশাপাশি ইসরায়েলের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানি। অন্যদিকে, ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর সৌদি আরব সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ বিভক্ত হয়ে পরেছে। কে কোন দেশের পক্ষে থাকবে সেটি নির্ধারণ করছে। বা যুদ্ধ শুরু হলে কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে পারে সেই কৌশল নির্ধারণ করছে। তবে কয়েকটি বড় দেশ আবার উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। সেই তালিকায় আছে চীন। ইসরায়েলে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, তাকে অনেকেই সে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘কট্টরপন্থি’ বা হার্ডলাইন সরকার বলে বর্ণনা করে থাকেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় সোলাইমানি নিহত হন। এই সেই কাশেম সোলাইমান যাকে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সামরিক কর্মকাণ্ডের স্থপতি বলা হয়ে থাকে। সেই দাগ এখনও ইরানের মন থেকে যায় নি। সেসময় ইরান পদক্ষেপের কথা বললেও বস্তুত তেমন কোনো কিছু করতে দেখা যায় নি অন্ততপক্ষে এবার যেভাবে সরাসরি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। যদিও সেসময় দেশ ছিল ভিন্ন। তারপর আবার এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যের সংকটকে আরও জটিল করে তুলবে। তাছাড়া ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলও এখন ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে। পুরোপুরিভাবে একঘরে না হলেও অধিকাংশ দেশই তাদের এই কর্মকান্ডকে সমর্থন করছে না। বিশেষত ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটানার পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে ইসরাইলের জন্য। ইসরাইলের হামলার পর থেকেই মূলত ইরানের পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কা করছিল ইসরাইল এবং হামলা থেকে বাঁচতে সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। অর্থাৎ এবার যে ইরান কোনোভাবেই ছেড়ে কথা বলবে না এমনটা ধরেই নিয়েছিল ইসরাইল।

দ্যা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে গেছে তেল আবিব। ইরানের হামলায় ইসরাইলের কতটা ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রতিশোধমূলক হামলা হয়েছে এবং এভাবে চলতে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা এখন যারা এই যুদ্ধে জড়িয়ে পরছে না সেই সব মিত্র দেশগুলো যে জড়াবে না সেই গ্যারান্টি কে দিবে? হতে পারে এখানেই ইসরাইল ও ইরানের সংক্ষিপ্ত উত্তেজনার পরিসমাপ্তি। আবার হতে পারে একটি শুরু। যা নতুন করে পৃথিবীকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিবে। দুই দেশের হাতেই একাধিক বিকল্প রয়েছে সমস্যাটি সমাধানের। সরাসরি যুদ্ধ ছাড়াও সমাধান করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে যুদ্ধে বিরত থাকতে বললেও তেল আবিবকে রক্ষায় নিজেদের অবস্থানের কথাও বলেছে। অর্থাৎ ইরান যদি হামলা করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তেল আবিবকে রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। কারণ মিত্র হিসেবে ইসরাইল অগ্রাধিকার পাবে। যুদ্ধ শুরু হলে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অবস্থা আরো মারাত্মক রূপ ধারণ করবে। এই মুহূর্তে ইরানের আক্রমণ ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধকে বৃহত্তর ও আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত করতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় আর কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে দুই দেশ একে অপরের উপর হামলার মত কোনো সিদ্ধান্ত বেছে নেয়। এর ফলে বড় কোনো সমস্যার মুখোমুখি হবে বিশ্ব। যেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-হামাসের সাথে সংঘর্ষ চলমান এবং এই সংকট বিশ্বকে বিপদের মুখে ফেলেছে।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট, পাবনা।

আমার বার্তা/জেএইচ

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস

প্রতি বছর ১ মে  পালিত হয় 'আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস' বা 'মে দিবস'। শুধুমাত্র আমাদের দেশেই

ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা

পয়লা মে, মহান মে দিবস। সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দিবসটি পালন করা হয়।

যৌতুক উপহার নয় ভিক্ষাবৃত্তি

মানুষের মনুষ্যত্ব ও নীতি নৈতিকতা দিনদিন লোপ পাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে মানুষের অধপতন ও চারিত্রিক বিপর্যয়

শ্রমিক দিবস ও বাংলাদেশের শ্রমজীবী সমাজ

উৎপাদনের জীবন্ত উপকরণ হিসেবে বিবেচিত হয় শ্রম। সাধারণ দৃষ্টিতে শ্রম মানে শারীরিক পরিশ্রম। অর্থনীতিতে শ্রম
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজনীতিবিদদের সিদ্ধান্তে জনস্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে: রাষ্ট্রপতি

অতি বাম-ডান মিলে সরকার উৎখাতে কাজ করছে: শেখ হাসিনা

এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয় প্রার্থী হওয়া নিয়ে আইনে কোনো বাধা নেই

দেশের সমুদ্রসীমায় ২ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ

হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

আর্চারকে নিয়ে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা ইংল্যান্ডের

মে দিবসে নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে শ্রমিক দল

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৪৫১ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

ডিপিএলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় এ ইউনিটের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫০৭৬০

ইইউর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ

কালুরঘাট সেতুতে জাহাজের ধাক্কা, বেঁকে গেছে গার্ডার

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মের পরীক্ষা স্থগিত

সাটুরিয়ায় বৃষ্টির প্রার্থনায় অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লীরা

মন্ত্রী হয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বসে নাটক দেখা বাদ দিলাম: সামন্ত লাল সেন

রাজধানীতে শব্দ দূষণের শিকার ৯৬ শতাংশ মানুষ

ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে পান্ত-দুবে-চাহাল

চুয়াডাঙ্গার রেকর্ড ভেঙে যশোরে তাপমাত্রা ৪৩.৮ ডিগ্রি

গাজীপুরে তীব্র গরমে বেঁকে গেছে রেললাইন