ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে ইসিতে ১৫৯৬ আপত্তি

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ২০:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনে খসড়া তালিকা প্রকাশ করলেও ৮২ আসনে দাবি-আপত্তি জানিয়ে এক হাজার ৫৯৬ আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।

ইসি সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ৮২ আসনের বিপরীতে দাবি-আপত্তি নিয়ে এক হাজার ৫৯৬টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে কোনো আবেদন সরাসরি ইসির সিনিয়র সচিবের দপ্তরে জমা হয়ে থাকলে সংখ্যাটা কিছুটা বাড়তে পারে।

গত ৩০ জুলাই ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনে খসড়া তালিকা প্রকাশ করে ইসি। এরপর ইসির প্রকাশিত সংসদীয় আসন নিয়ে কারো দাবি-আপত্তি থাকলে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ দেয় ইসি। এসময়ের মধ্যে প্রকাশিত খসড়া ৩০০ আসনের মধ্যে ৮২ টি আসনের বিপরীতে এক হাজার ৫৯৬টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি হবে তার জন্য পুরো আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

খসড়া প্রকাশের পরদিন থেকে (৩১ জুলাই) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে শুরু করেছিলেন সংক্ষুব্ধরা।

এবার গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে বাগেরহাট জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাগেরহাট-৪ আসন বহাল রাখার দাবি জানিয়ে বিএনপির নেতারা। এ নিয়ে তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা কাজী মনিরুজ্জামান মনির সিইসির সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলাকে দুই সংসদীয় আসনে বিভক্ত না করে আগের মত ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৩ আসনে রাখার দাবি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে ইসির কাছে। সেই আবেদনে বিজয়নগরের ভোটারদের পক্ষে-গোলাম মোস্তফা সুমন, মোজাহিদুজ্জামান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, এ কে এম গোলাম মুহীত ওসমানি, মো. বায়েজিদ মিয়া, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিনুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মো. জহিরুল ইসলাম সই করেন।

যেভাবে করা হয়েছে সংসদীয় আসনে সীমানা পুনর্নির্ধারণ

পার্বত্য এলাকার তিন জেলার তিনটি আসন অপরিবর্তনীয় রাখা হয়েছে।

> দুই আসন বিশিষ্ট জেলার আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, কারণ ভোটার/জনসংখ্যার অনুপাতে আসন বাড়ালে জেলাভিত্তিক ভোটারের জাতীয় গড়ের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়। আবার দুটি আসনকে একটি আসন করলে ভোটার সংখ্যা গড়ের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়।

> তিন আসন বিশিষ্ট জেলার আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, কারণ আসন হ্রাস/বৃদ্ধি করা হলে ভোটার/জনসংখ্যার অনুপাতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে পড়ে।

> যেসব আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য কোনো আবেদন দাখিল হয়নি, সে আসনগুলো অপরিবর্তীত রাখা হয়েছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে উপজেলা/থানা ইউনিটকে যতদূর সম্ভব অখণ্ড রাখা হয়েছে।

> জেলার মধ্যকার আসনের ভোটার সংখ্যা সবোর্চ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।

> যতদূর সম্ভব প্রশাসনিক ও নির্বাচনী সুব্যবস্থার বিষয় বিবেচনায় রেখে উপজেলা, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডের অখণ্ডতা বজায় রাখা হয়েছে।

> ইউনিয়ন, সিটি কপোরেশনের ওয়ার্ড ও পৌরসভার একাধিক সংসদীয় আসনের মধ্যে বিভাজন না করার চেষ্টা হয়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকার জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, প্রশাসনিক পরিধি বিবেচনায় নির্বাচনি এলাকা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

> সীমানা পুনর্নির্ধারণকালে সংশ্লিষ্ট জনগণের সেবাবিষয়ক সুবিধা/অসুবিধার বিষয় যতদূর সম্ভব বিবেচনা করা হয়েছে।

> ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য (যেমন নদীর অবস্থান) ও যোগাযোগ ব্যবস্থার (যেমন রাস্তাঘাট) মত সুবিধা ও অসুবিধা যতদূর সম্ভব বিবেচনা করা হয়েছে।

> যেসব প্রশাসনিক এলাকা নতুন সৃষ্টি হয়েছে বা সম্প্রসারণ হয়েছে বা বিলুপ্ত হয়েছে তা অন্তর্ভুক্ত/কর্তন করা এবং পরিবর্তিত নাম সংশোধন করা হয়েছে।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। এটা ধরে একটি আসন বাড়ালে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। দুই জেলার আসনই এফেক্টেড হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।


আমার বার্তা/এমই