গর্ভাবস্থায় তীব্র বমি-বমি ভাব হলে করণীয়

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ

  ডা.সায়মা আফরোজ:

গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া খুব সাধারণ একটা বিষয়। একে বলা হয় মর্নিং সিকনেস। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো প্রথম তিন-চার মাসের মধ্যে কমে যায় বা একেবারেই চলে যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এই গর্ভাবস্থায় তীব্র বমি-বমি ভাব হতে পারে।

কারণ : এর সঠিক কারণ স্পষ্ট না হলেও গর্ভাবস্থায় হরমোন পরিবর্তনের কারণে এমনটি হতে পারে। ইবঃধ যপম নামক হরমোন বৃদ্ধির কারণে ব্রেইনের ডমিটিং সেন্টারে উত্তেজনা তৈরি হয়ে তীব্র বমি ভাব বা বমি হয়ে থাকে। প্রথমদিকে অল্প বয়স ও অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থায় হাইপার প্রমেসিস গ্রেভিডেরাম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পরিবারে মা বা বোনের হলে এই হাইপার প্রমেসিস হতে পারে। আগের গর্ভাবস্থায় যদি কারও হাইপার প্রমেসিস গ্রেভিডেরাম হয়ে থাকে, তবে তার পরবর্তী গর্ভাবস্থায় আবার হতে পারে।

গর্ভাস্থায় সাধারণত শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। ইবঃধ যপম নামক হরমোনের কারণে এই লক্ষণের উদ্রেক হয়।

লক্ষণ : দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র বমি-বমি ভাব বা বমি হওয়া। পানিশূন্যতা দেখা দেওয়া। ওজন কমে যাওয়া। শরীরে লবণ-পানির তারতম্য হওয়া।

করণীয় : সকালে মুড়ি খাবেন। ড্রাই টোস্ট খেতে পারেন। তবে এসব খেতে হবে অল্প অল্প করে, একটু পর পর। গর্ভাবস্থায় ভাজাপোড়া, ফ্যাটি, স্পাইসি ফুড জাতীয় খাবার খাওয়া মোটেও চলবে না। খাবারের মাঝে অল্প করে পানি পান করতে পারেন। তবে খাবারের শেষে নয়। দিনে কমপক্ষে ২ থেকে আড়াই লিটার পানি ও পানীয় পান করতে পারেন। একইসঙ্গে বমির ওষুধ সেবন চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এই বমি কারও ক্ষেত্রে এত বেশি হয় যে, গর্ভবতীর স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। এই অবস্থাকে বলা হয়ে থাকে হাইপার প্রমেসিস গ্রেভিডেরাম।

এমন অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হবে। শিরাপথে স্যালাইন, বমি ও অ্যাসিডিটির ইনজেকশন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। সঙ্গে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন-সি সাপ্লিমেন্টেশন দেওয়া যেতে পারে। বমি বন্ধ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত মাকে না খেয়ে থাকতে হবে। শিরাপথে স্যালাইন চলবে। তার পর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক খাবারে ফিরিয়ে যেতে হবে।

সন্তানের ওপর প্রভাব : মা যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেন, তা হলে সন্তানের ওপর তেমন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। কিন্তু গর্ভাবস্থায় ওজন কমে গেলে পরবর্তী সময় সন্তানের ওজন কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এই মর্নিং সিকনেস বা হাইপার প্রমেসিস গ্রেভিডেরাম প্রতিকারের জন্য একজন নারীকে অবশ্যই পূর্বপরিকল্পনা করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে গর্ভবতী হতে হবে। আর যদি গর্ভাবস্থায় লক্ষণগুলো দেখা যায়, তখন দ্রুত গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক : (অবস্ ও গাইনী), ডিএমইউ (আল্ট্রাসনোগ্রাম), আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা।

 

আমার বার্তা/জেএইচ