আট বছর ধরে আদালত হয়রানিতে কায়সার হামিদ

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৯:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক :

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলেছেন ১৯ ম্যাচ। পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। নব্বইয়ের দশকে একনামে তাকে চিনতেন দেশের আপামর ফুটবলপ্রেমী জনতা। দেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডার দীর্ঘ আট বছর ধরে ঘুরছেন আদালতপাড়ায়। যার থাকার কথা ফুটবল মাঠে, সেই তারকা ফুটবলার একটি কোম্পানির প্রতারণার মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন আদালতে।

এর আগে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। দীর্ঘ লড়াই শেষে এক মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে খালাস দিলেও একই কোম্পানির আরেক মামলায় এখনো হাজিরা দিচ্ছেন নিয়মিত। ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় নিয়মিত আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন কায়সার হামিদ।

আজ রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে কথা হয় কায়সার হামিদের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি দেশের হয়ে খেলেছি। আজ আমাকে মিথ্যা মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে। এতে আমার অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। আমার থাকার কথা খেলার মাঠে। কিন্তু মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিতে হচ্ছে আমাকে। এক মামলায় খালাস। আরও একটি মামলা চলছে। আশা করছি এটা থেকেও খালাস পাবো। আরও একটি মামলা চলছে চট্টগ্রামে। আশা করছি সেটা থেকেও খালাস পাবো।

‘আমার বিরুদ্ধে মামলায় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। এক মামলায় খালাস পেয়েছি। তবুও নির্দোষ হয়েও প্রতিনিয়ত আদালতে ঘুরছি। প্রকৃত জড়িত যারা, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।’

জাতীয় ফুটবল দলের এক সময়ের অধিনায়ক কায়সার হামিদ বলেন, মিথ্যা মামলায় আমি দিনের পর দিন আদালতে ঘুরছি। পুলিশ মামলা নেওয়ার সময় যাচাই বাছাই করে নিলে আমার এই হয়রানি হতো না। পুলিশের কাছে আমার অনুরোধ, তারা যেন যাচাই বাছাই করে মামলা নেন। যাতে মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পায়।

‘আমি দীর্ঘ আট বছর ধরে আদালতে, আদালতের বারান্দায় ঘুরছি। আমি এই হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।’

তিনি বলেন, আমি ছোট থেকে ব্রাজিলের সাপোর্ট করি। চলতি বিশ্বকাপে এশিয়ান দেশগুলো ভালো খেলছে। তবে আর্জেন্টিনা যেন শিরোপা পায়, সে প্রত্যাশা করছি।

২০১৪ সালে বনানী থানায় করা একটি মামলায় ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি এলিফ্যান্ট রোড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরের দিন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে আদালত তাকে খালাস প্রদান করেন।

গ্রেপ্তারের পর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী বলেছিলেন, নিউওয়ে মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল কায়সার হামিদের। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে লাভ বেশি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে টাকা দিতে পারেননি। একপর্যায়ে গত আট বছর আগে প্রতিষ্ঠানটিই বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ লগ্নিকারীদের বেশ কয়েকজন তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর একটি মামলা সিআইডির ঢাকা মেট্রোর উত্তর অঞ্চল তদন্ত করছে। মামলায় কায়সার হামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।

কায়সার হামিদ ‘মোহামেডানের কায়সার হামিদ’ নামেই পরিচিত ছিলেন বেশি। তার মা রানী হামিদ বাংলাদেশের সেরা দাবাড়ুদের একজন। তার বাবা প্রয়াত সেনা কর্মকর্তা আবদুল হামিদও ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

এবি/ জিয়া