অপহরণ মামলায় খালাস সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৮:০৭ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক :

সারা দেশে আলোচিত সিরিয়াল কিলার ও ধর্ষক রসু খাঁকে একটি অপহরণের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এক পোশাক শ্রমিককে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণের অভিযোগের তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি থেকে অব্যাহতি পান তিনি। এ ছাড়াও রসু খাঁ হত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণসহ ১১ মামলার আসামি। 

আজ রোববার দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী রসু খাঁকে অব্যাহতির এই রায় দেন। 

অপহরণের শিকার ওই নারী রাজধানীর উত্তরায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তাঁর বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলে। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৬ ডিসেম্বর রসু খাঁ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীকে চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়নে মামার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন রসু খাঁর স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তখন রসু খাঁর সঙ্গে ওই নারীর বিরোধ শুরু দেয়। ১৭ ডিসেম্বর রাতে নারীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রসু খাঁ ওই ইউনিয়নের চাপিলা বিলের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রসু খাঁ পালিয়ে যান। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সংবাদ পেয়ে তাঁর বাবা চাঁদপুরে আসেন। মেয়ে সুস্থ হওয়ার পর ২০০৫ সালের ৬ জানুয়ারি চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বিয়ের প্রলোভনে অপরহণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় রসু খাঁকে আসামি করে মামলা করেন। 

মামল তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদুর রহমান ২০০৫ সালের ২৯ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

এই মামলায় রসু খাঁকে অব্যাহতির রায়ের বিষয়ে সরকারপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘মামলাটি দীর্ঘ ১৮ বছর আদালতে চলমান অবস্থায় আট জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আদালত এই রায় দিয়েছেন।’ 

রসু খাঁর বিরুদ্ধে নারীদের ধর্ষণ ও অপহরণসহ ১১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুইটিতে খালাস এবং ছয়টি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন। 

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন দেবাশীষ রায় ও এবং সরকারপক্ষে ছিলেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খোরশেদ আলম শাওন। 

২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় টঙ্গী থেকে রসু খাঁ গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁর মোবাইল ফোনের সূত্রে স্থানীয় এক কিশোরী হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তিন দিনের রিমান্ডে মুখ খোলেন রসু খাঁ। বেরিয়ে আসে বেশ কয়েকটি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা। রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ১১টি খুনের কথা ওঠে আসে। আরও ১০১ জন নারীকে হত্যা করার পরিকল্পনার কথাও স্বীকার করেন রসু খাঁ। 

আদালতে দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিয়ের পর অন্য এক নারীর প্রেম পড়েন রসু খাঁ। সেই নারীর ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে বেদম পিটুনি খান তিনি। এরপরই ১০১টা হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। পুলিশের হাতে আটকের আগে পর্যন্ত ১১ জন নারীকে হত্যা ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন রসু খাঁ। 

এবি/ জিয়া