নেতানিয়াহু ‘যুদ্ধের নায়ক’, মনে হয় আমিও তাই: ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে প্রায় দুই বছর ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। বর্বর এই আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে উঠেছে গণহত্যার অভিযোগও।

তা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধের নায়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে ইসরায়েলি এই প্রধানমন্ত্রীর ওপর।

বুধবার (২০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধের নায়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার রক্ষণশীল রেডিও উপস্থাপক মার্ক লেভিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “তিনি ভালো মানুষ। তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন... তিনি যুদ্ধের নায়ক, কারণ আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। তিনি যুদ্ধের নায়ক। মনে হয় আমিও তাই।”

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জবাবদিহির প্রচেষ্টা নিয়েও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “তারা তাকে জেলে ঢোকানোর চেষ্টা করছে।”

তবে তিনি আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা বলেছেন নাকি ইসরায়েলে চলমান দুর্নীতির মামলার কথা বোঝাতে চেয়েছেন, তা পরিষ্কার নয়।

২০২০ সাল থেকে দুর্নীতির অভিযোগে বিচারাধীন নেতানিয়াহু ইসরায়েলের ইতিহাসে ক্ষমতাসীন অবস্থায় ফৌজদারি বিচারের মুখোমুখি হওয়া প্রথম প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।

এছাড়া গাজায় ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

এদিকে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ আইয়াল জামির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুসারে গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন।

সেনাবাহিনী দ্রুত অতিরিক্ত ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা ডাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং আরও ২০ হাজার সেনার মেয়াদ ৪০ দিন বাড়ানো হচ্ছে।

ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাটজ ও জামির দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড, জেনারেল স্টাফ, সামরিক গোয়েন্দা, অপারেশন বিভাগ এবং শিন বেতের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জামির দখল পরিকল্পনার ধাপগুলো তুলে ধরেন, যার মধ্যে উত্তর গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি আরও জোরদার করা বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় যে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল, ফিলিস্তিনিরা ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা সেটিকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করছেন। এ অভিযানে গণহত্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাশাপাশি মানুষকে অনাহারে রাখার অভিযোগ রয়েছে।

এ পর্যন্ত এ গণহত্যায় প্রাণ গেছে ৬২ হাজারের বেশি মানুষের, আহত হয়েছেন এক লাখ ৫৬ হাজার। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ।


আমার বার্তা/জেএইচ