সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় ছয় মাস আগে সিরিয়ায় ক্ষমতা থেকে উৎখাত হন দেশটির দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ। তাঁকে উৎখাতে নেতৃত্ব দেন দেশটির বর্তমান শাসক আহমেদ আল–শারা।
সোমবার (৩০ জুন) এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে তিনি এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা জানান। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
হোয়াইট হাউজের এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, আমি সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত একটি বিলে সই করেছি। আমরা এমন একটি সিরিয়া দেখতে চাই, যা হবে শান্তিপূর্ণ, ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা একটি আধুনিক রাষ্ট্র।
ট্রাম্প আরও বলেন, আমরা একটি সন্ত্রাসমুক্ত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য নিরাপদ ও সহনশীল সিরিয়া গড়ে তুলতে চাই। যুক্তরাষ্ট্র সেই লক্ষ্যে সিরিয়াকে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই ঘোষণাকে বিশ্লেষকরা ‘যুগান্তকারী কূটনৈতিক পরিবর্তন’ বলে দাবি করছেন। তাদের মতে, এটি শুধু সিরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নয়, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে একটি নতুন ধারা সূচিত করতে পারে। সেই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত সিরিয়ার আন্তর্জাতিক পুনঃঅন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকতে পারে।
ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক ব্রিফিংয়ে জানান, প্রেসিডেন্ট সৌদি আরব সফরের সময় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল শারার সঙ্গে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আজ তা বাস্তবায়িত হলো। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সিরিয়াকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবে।
গত মাসে সৌদি আরবে এক উচ্চপর্যায়ের সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা’র সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিরিয়ার পুনর্গঠন, জ্বালানি খাত, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সিরিয়ার ওপর ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের কারণেই ছিল এই কঠোর অবস্থান।
কিন্তু ২০২৫ সালে সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ক্ষমতায় আসার পর দেশের ভেতরে রাজনৈতিক সংস্কার ও উদারীকরণের বার্তা আন্তর্জাতিক পরিসরে ইতিবাচক সাড়া ফেলে। সেই প্রেক্ষাপটেই মার্কিন প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। - সূত্র: আনাদোলু
আমার বার্তা/এমই