দুই শিশুর চিকিৎসার ব্যয়ভার নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

কুড়িগ্রামের আলমগীর রানা, পেশায় পরিবহন শ্রমিক। প্রায় সাড়ে সাত মাস আগে রানার স্ত্রী নাসরিন ফুটফুটে দুই যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তবে যমজ শিশু দুটির মেরুদণ্ড ও স্পাইন জন্মগতভাবে জোড়ালাগা। দরিদ্র পিতা- মাতার পক্ষে এ ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচারের ব্যয়ভার বহন করা অসম্ভব।

মেরুদণ্ড জোড়া লাগা আট মাস ১৩ দিনের শিশু নুহা ও নাবা চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায়) শিশু দুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেছেন। 

অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু নুহা ও নাবার সার্বক্ষণিক খবর নিচ্ছেন। তিনি শিশুদ্বয়ের চিকিৎসার সকল খরচ বহন করছেন এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সে নির্দেশনা বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশু দুটির চিকিৎসার জন্য যা যা করার তাই যেন আমরা করি। সেজন্য আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কারো সহযোগীতা লাগলে তাকেও ডাকা হবে।

সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কুড়িগ্রামের জোড়া লাগা শিশু দুজনের চিকিৎসার ভার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। আমাদের উপাচার্যকে সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছেন। শিশু দুটির চিকিৎসা প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল ও সময় সাপেক্ষ। বেশ কয়েক ধাপে এর অপারেশন করা লাগবে । নিউরো সার্জন, ইউরোলজিস্টস, শিশু সার্জন, বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জন, এনেস্থিওলজিস্ট, শিশু পুষ্টিবিদসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের প্রয়োজন হবে।

শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সিটিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে মেডিক্যাল বোর্ডে এসে শিশু দুটির কেস স্টাডি দেখে বুঝতে পারলাম, শিশু দুটির অপারেশন অত্যন্ত জটিল ও সময় সাপেক্ষ। এ অপারেশ বেশ কয়েক ধাপে করতে হবে।

মেডিক্যাল বোর্ডে ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, শিশু দুটির মেরুদণ্ড জোড়া ছাড়ানোর পাশাপাশি ইউরোলজিক্যাল কিছু কাজ করতে হবে। ইউরোলজিক্যাল কাজও বেশ জটিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারী বিভাগে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন এর অধীনে ভতি থাকা মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো শিশু(Conjoined twin) নুহা ও নাবা। তাদের বয়স ৮ মাস ১৩ দিন। কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে এই জমজ কন্যা সন্তানদ্বয়ের জন্ম হয়। তাদের পিছনে মেরুদন্ড জোড়া লাগানো আছে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় (Pygopagus Conjoined twin) বলে। দেশে কোনো মেরুদণ্ড জোড়ালাগা শিশুর অস্ত্রোপচার, এটাই প্রথম। জটিল, কঠিন ও অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক এবং সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন। 


এবি/ইজা