বাংলাদেশে এইডস ঝুঁকিতে নারীরা 

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  বশির হোসেন খান:

ফাইল ছবি

প্রাণঘাতী রোগের নাম এইডস। দেশে দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ঝুঁকিতে  বাংলাদেশে। পার্শ্ববর্তী দেশে ভারত ও মিয়ানমার এ রোগের উচ্চঝুঁকিতে। সচেতনতা অভাবেই এইডস ঝুঁকিতে নারীরাও। সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট শনাক্ত রোগীর বড় একটি অংশ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর। সবকিছু বিবেচনায় এইচআইভির সংক্রমণ রুখতে দেশের বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাণঘাতী এই রোগ প্রতিরোধে সরকারি- বেসরকারিভাবে যেমন উদ্যোগ নিতে হবে তেমনি নাগরিকদের মধ্যেই বাড়াতে হবে সচেতনতা। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমার উচ্চঝুঁকির দেশ। তাদের সঙ্গে এদেশের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের নানারকম যোগাযোগ আছে। তাই জনগোষ্ঠী সচেতন না হলে এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হবে না।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ভাইরোলজিস্ট ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, অসচেতনার কারণে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত থেকে প্রতিনিয়তই বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কোনো প্রকার পরিক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়া অহর-অহর আসা-যাওয়া করছে যে কেউ।  তাই বাংলাদেশে বেশি প্রবেশ করছে রোহিঙ্গা। আর এ কারণে  এইডস এর সঙ্গে বেশি। 

১০ মিনিটেই পরীক্ষা: বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে এইচআইভি স্ক্রিনিং টেস্ট চালু করা জরুরি। এই টেস্টে খুব বেশি খরচ হবে না, কিছু কিট দিলে ১০ মিনিটেই পরীক্ষা করা সম্ভব। 

যে ভাবে ছড়াবে এইডস: আক্রন্ত ব্যাক্তি থেকে সহজেই এইডস প্রবেশ করতে পারে। কনডম ছাড়া যৌন মিলনে ছড়াতে পারে এই সংক্রমন। জরুরি পদক্ষেপ নিলে কমে যাবে এই সংক্রমণ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশের ২৮ শমিক ৫ শতাংশ নারীই এইডস বিষয়ে অবগত নন। অবশ্য এইডসের অন্তত একটি বাহক সম্পর্কে অবগত ৭১ শমিক ৫ শতাংশ নারী। ৩৬ শতাংশ নারী সবগুলো বাহক সম্পর্কে অবগত। পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে এ হার ছিল ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ বাহক সম্পর্কে নারীদের মধ্যে সচেতনতার হার বেড়েছে ৭ শতাংশ। যদিও ৮-১০ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল সরকারের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল (এনএএসসি) প্রোগ্রামের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ১২ লাখ ৯১ হাজার ৬৯ জনের এইচআইভি/এইডস শনাক্তকরণ পরীক্ষা হয়েছে। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৮৯।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গত বছর নতুনভাবে এইচআইভি সংক্রমিত ৭২৯ জনের মধ্যে পুরুষ ৪২০ জন, নারী ২১০ ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ১২ জন। গত এক বছরে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ জনগোষ্ঠীর ১৮৬ জন (২৬%), রোহিঙ্গা ১৮৮ জন (২৬%), বিদেশফেরত প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্য ১৪৪ জন (২০%), ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারী ৬১ জন (৮%), নারী যৌনকর্মী ১৭ জন (২%), সমকামী ৬৭ জন (৯%), পুরুষ যৌনকর্মী ৫৩ জন (৭%) ও ট্রান্সজেন্ডার ১৩ জন (২%) রয়েছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এসডিজি ফোকাল পয়েন্ট আলমগীর হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এইডস সংক্রমনের সংখ্যা খুব বেশি। এই বিষয় নতুন তথ্য আনতে হবে। মানুষ কতটুকু সচেতন আছে সেই তথ্য দিতে হবে। 

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ভূইয়া বলেন, স্ক্রিনিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নত করা হবে। এইচআইভি রোধে স্ক্রিনিংয়ের বিকল্প নেই।


এবি/ইজা