বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে দেশের বিনোদন অঙ্গনের আলোচিত অভিনেত্রী এলিনা শাম্মী একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে সমাজের প্রচলিত অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কথা বলেন।
গত বছরের আন্দোলনে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজপথে নেমেছিলেন, স্বৈরাচারবিরোধী স্লোগানে গলা মিলিয়েছিলেন। এবার তিনি নিজের পোস্টে নিজেকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেন— “সুন্দর দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি, আবার আমিই দুর্নীতি করি।”
শাম্মী লেখেন, “যখন একটা ফলের বেশির ভাগ অংশই পচে যায়, সেটা খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। সমাজেও যখন পচন ধরে, তখন অনেকখানি বাদ দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হয়। এক-দেড় যুগ ধরে যে সমাজে পঁচন ধরেছে, সেখানে এক বছরে সুগন্ধি প্রত্যাশা করা বাতুলতা ছাড়া কিছু নয়।”
তিনি সমাজে গড়ে ওঠা স্বাভাবিক দুর্নীতির চর্চার কঠোর সমালোচনা করেন। লিখেন, “আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে ঘুষ নেওয়ার, ঘুষ দেওয়ার। রমজানে বা বন্যায় দাম বাড়িয়ে দেই, ভোট দেয়ার আগেই শুনি ‘ভোট হয়ে গেছে’। এসবই আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।”
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরের অবস্থাও তুলে ধরেন শাম্মী। “আমাদের স্কুল কলেজে ছাত্ররা যেন শিক্ষক, আর শিক্ষকদের ছাত্রদের মতো নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে হয়। ঈদের সময় আমরা পরিবহন ভাড়া ডাবলের বেশি বাড়িয়ে দেই।”
তিনি সমাজের অসংখ্য অসঙ্গতির উল্লেখ করে বলেন, “এসব অভ্যাস বদলাতে হলে দীর্ঘমেয়াদে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রয়োজন।”
সবশেষে নিজের অবস্থান নিয়ে শাম্মী লেখেন, “সমস্যা হচ্ছে, আমি নিজেই দ্বিধাগ্রস্ত। আমি ঘুষকে ঘৃণা করি, আবার সুযোগ পেলে ঘুষ দেই। আমি ময়লা পছন্দ করি না, আবার নিজের ময়লাই রাস্তায় ফেলি। আমি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, অথচ নিজের আচরণেই আমি স্বৈরাচার। ভাই, নিজেকে বদলান, দেশ বদলাতে কয়দিন?”
এ পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে বলছেন, এলিনা শাম্মীর এই স্বীকারোক্তিমূলক প্রতিবাদই বর্তমান প্রজন্মের বাস্তবচিত্র।
আমার বার্তা/এমই