যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতি পোশাক শিল্পের জন্য ইতিবাচক: ফজলে শামীম এহসান

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৬:১৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

যুক্তরাষ্ট্র চীন ব্যতীত অন্যান্য দেশের জন্য প্রায় সমান হারে আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করাকে বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান। তিনি বলেন, বিশেষ করে বাংলাদেশসহ প্রধান পোশাক রফতানিকারক দেশগুলোর জন্য এই শুল্ক ১৯-২০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা রক্ষা পেয়েছে।

ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘এজন্য আমরা মার্কিন প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যারা সব ধরনের অতিরিক্ত জটিল শর্ত এড়িয়ে একটি ন্যায্য ও প্রায় সমতাভিত্তিক শুল্ক কাঠামো প্রণয়ন করেছেন।’

এই অর্জনের পেছনে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা ও তার নেতৃত্বাধীন টিমের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তাদের প্রজ্ঞা ও নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার ফলেই বাংলাদেশ অন্যান্য প্রধান পোশাক রফতানিকারক দেশগুলোর সমান সুযোগ পেয়েছে।’

তবে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হলে দেশীয় উদ্যোক্তাদের আরও সচেতন ও দক্ষ হতে হবে বলে মনে করেন ফজলে শামীম এহসান।

তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে, পণ্যের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কিন ক্রেতাদের বোঝাতে হবে যে এই শুল্ক আমদানিকারকদের বহন করতে হবে এবং শেষ পর্যন্ত এটি চূড়ান্ত ভোক্তার ওপরই বর্তাবে।’

তিনি সতর্ক করেন, ‘শুল্কের কারণে পণ্যের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে বিক্রিতে প্রভাব পড়তে পারে। ফলে অর্ডার কিছুটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং এই সুযোগে কিছু ক্রেতা অন্যায্যভাবে দাম কমানোর চেষ্টা করতে পারেন।’

তবে তিনি আশাবাদী, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর জন্যও একই বা তার চেয়েও বেশি শুল্কহার প্রযোজ্য হওয়ায় আমরা দরকষাকষির ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। বরং, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনলে চীন বা ভারতের তুলনায় শুল্ক বিবেচনায় বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।’

এই পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা টিকে থাকতে পারি, তবে ভবিষ্যতে চীন ও ভিয়েতনাম থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি জোর দেন, ‘এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য শিল্পখাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক নীতিগত সহায়তা এবং সুলভ সুদে ঋণের ব্যবস্থা এখন সময়ের দাবি।’

বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার চাপ মোকাবিলা করে দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত। তাই বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।’

সবশেষে ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমাদের শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশলগত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক খাত এই নতুন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আরও সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে।’

আমার বার্তা/এল/এমই