পায়রা সমুদ্রবন্দরে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর জন্য কেনা হচ্ছে যন্ত্র
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৩:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

পায়রা সমুদ্রবন্দরে জাহাজ থেকে জেটিতে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর দুটি যন্ত্র কেনা, স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ব্যয় হবে ১৬২ কোটি টাকা।
‘পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প’–এর আওতায় এ ব্যয় করার একটি প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে এ কেনাকাটার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাব দাখিল করে। এর মধ্যে তিনটির প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ পেয়েছে এইচপি ও এনজে চায়না।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদির নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুসারে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। এক মাস আগে গত ২৫ জুন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ক এক বৈঠকে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল জানিয়েছিলেন, টার্মিনাল, সংযোগ সড়ক ও আন্ধারমানিক নদের ওপর সেতু নির্মাণ শেষে ২০২৬ সালের ১ জুলাই এ বন্দরের প্রথম টার্মিনালের কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হবে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়ায় অবস্থিত পায়রা বন্দরের কাজ করছে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন, চায়না হারবার অ্যান্ড চ্যানেল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো এবং চায়না শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন। এখন পর্যন্ত পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমে ৭ হাজার ৩৮১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
আসছে দুই কার্গো এলএনজি
ক্রয় কমিটিতে আজ মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির দুটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৮৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি।
গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১১ দশমিক ৯৭ মার্কিন ডলার হিসেবে এলএনজি আনতে বাংলাদেশি মুদ্রায় খরচ পড়ছে ৫০২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আর দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনের কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১১ দশমিক ৯৫ ডলার হিসেবে কিনতে খরচ পড়ছে ৪৮৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
বৈঠকে ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) ’ প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাকেজের জন্য ২৮৮ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স এবং এস এস রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।
সরকারি জমি প্রতীকী মূল্যে নয়
এদিকে সরকারি জমি কারও কাছে আর প্রতীকী মূল্যে বিক্রি করা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এখন থেকে সরকারি জমি যারাই নিতে চাইবে, যথাযথ অর্থ দিয়ে নিতে হবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ) সম্প্রসারণের জন্য বন্ধ থাকা চট্টগ্রামের জলিল টেক্সটাইল মিলসের ৫৪ দশমিক ৯৯ একর জমি প্রতীকী মূল্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘জলিল টেক্সটাইল মিলস সেনাবাহিনী নিতে চাচ্ছে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, প্রতীকী মূল্যে দেব না। এখন থেকে প্রতীকী মূল্যটা এড়িয়ে চলব। যারাই নিতে চায়, অর্থ দিয়ে নেবে। কারণ, প্রতীকী মূল্যে দিলে যারা নিয়ে যায়, তারা ঠিকমতো ব্যবহার করে না।’
জলিল টেক্সটাইল মিলসের জমি কি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তাদেরই দেওয়া হবে। তবে মূল্যটা নির্ধারণ করে প্রস্তাব আসতে হবে।
এদিকে বৈঠক শেষে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, জলিল টেক্সটাইল মিলসের জমি সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই