স্কুলছাত্রী ধর্ষণ: সালিশে ৫০ হাজার টাকায় আপসের চেষ্টা, আটক ৩
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১১:২০ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের আলেচু পাড়ায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে একই এলাকার পাঁচজন যুবক মিলে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে।
এই ঘটনার এক সপ্তাহ পর মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) স্থানীয় মেম্বার, হেডম্যান ও পাড়া প্রধানসহ (কারবারী) পাড়ার গণমাণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক সালিশে আপসের চেষ্টা করা হয়। তবে এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টায় মারমা জনগোষ্ঠীর সামাজিক আইনের রীতিনীতি অনুসারে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারকে চিকিৎসা খরচের জন্য পাঁচজন ধর্ষককে ১০ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভুক্তভোগীর মা-বাবাকে আপস করানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাইন্দু পাড়া প্রধান থোয়াইসা মারমার উপস্থিতিতে এই বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। স্থানীয় মেম্বার গংবাসে মার্মা এর ভাষ্যমতে, সামাজিক সালিশে ভুক্তভোগীর বক্তব্যে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুর দিকে পাইন্দু হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা রাংমেশের মার্মার ছেলে শৈহাইনু মার্মা প্রথম তাকে ধর্ষণ করে পরে বিষয়টি তার মাধ্যমে তার বন্ধু ক্যাহ্লা ওয়াইং, ক্য ওয়ং সাই, চহাই, উহাই সিং ও ক্য সাই ওয়ং জানতে পারে।
পরে সামাজিক ভয় দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে ওই ছাত্রীকে তারা ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। এতে সবার মধ্যে এই ঘটনা জানাজানি হয় যায়।
পরে মারমা সামাজিক বিচারে অভিযুক্ত ধর্ষণকারী ৫ জনকে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ও চিকিৎসার খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভুক্তভোগীর বাবার সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করেন। তবে স্থানীয়রা সহযোগিতা করলে সত্য ঘটনা বলতে রাজি আছি বলে জানিয়েছেন।
এদিকে গতকাল রাতে ঘটননাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি জানান।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আসামিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাউছার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত উহাইসিং, ক্যহ্লাওয়াং, ক্যসাইওয়াং মারমা নামে তিনজনকে আটক করে। তাদের বান্দরবান সদর থানায় নিয়ে আশা হচ্ছে। বাকিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
আমার বার্তা/জেএইচ