চোর সন্দেহে গণপিটুনি, প্রাণ গেল জামাই-শ্বশুরের

প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৫:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

রংপুরের তারাগঞ্জে ভ্যানচোর সন্দেহে জনতার গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই জন। 

শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে ৯টার দিকে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।

নিহতরা হলেন- তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুরের রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুরের বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। সম্পর্কে তারা ভাগিনা জামাই-শ্বশুর।

নিহতের পরিবার, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর দাসের বিয়ে কথা বার্তা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। আজ রোববার বিয়ের দিনতারিখ ঠিক করার কথা ছিল। এজন্য মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ের প্রদীপ দাস রুপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হয়। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় এসে রুপলাল কে ফোন করে। সেখানে রুপালাল গিয়ে দুইজনে রিকশায় চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হয়।

রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের কয়েকজন আটক করে। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে।
 

একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করেন লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাশারিপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আলমগীর হোসেন ও বুড়িরহাটের মেহেদী হাসান। এতে লোকজনের সন্দেহ আরও বাড়ে। অজ্ঞান করে ভ্যান চুরি সন্দেহে তাদের মারধর শুরু করেন। বটতলা থেকে মারতে মারতে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে আসা হয় তাদের। মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে সেখানে ফেলে রাখা হয় তাদের। পরে রাত ১১টায় তাদের উদ্ধার করে পুলিশ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

এ সময় তারাগঞ্জ হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক রুপলাল দাসকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রোববার (১০ আগস্ট) ভোরে তিনিও মারা যান বলেন নিশ্চিত করেছেন নিহত রুপলাল দাসের ভাই খোকন দাস।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, গণ পিটুনিতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।

আমার বার্তা/এল/এমই