তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমার ওপরে, নদীপাড়ে বন্যা আতঙ্ক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ছিল ৫২ মিটার ১৭ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টার দিকে তা এসে দাঁড়ায় বিপৎসীমায়। এরপর দুপুরে তা ৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়।
এর আগে গত ২৯ জুলাই রাতেও একই মাত্রায় পানি বেড়েছিল। তখন তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়।
গত কয়েকদিন ধরে পানি ওঠানামা করায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদীপাড়ের মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক নিচু এলাকায় ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, তিস্তা নদী সংলগ্ন এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বখড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক সোলেমান আলী বলেন, গত কয়দিনে আমাদের সব আমনের চারা ডুবে গেছে। এখন আবার পানি বাড়ছে। প্রতিদিন পানি দেখে ঘুমাতে পারছি না।
বাইশপুকুর চরের বাসিন্দা মর্জিনা বেগম বলেন, প্রতি বছরই বন্যায় ক্ষতি হয়। এবারও সেই আশঙ্কা করছি। আমরা সাহায্য চাই না, চাই তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, সকালে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। এখন উজান থেকে পানি আসায় আমাদের বাড়িঘরের উঠানে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের চন্ডিমারী ও গোবর্ধন এলাকাও আংশিক প্লাবিত হয়েছে। অনেক ধানক্ষেত ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উৎকণ্ঠা।
সিন্দুর্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম বলেন, নিম্নাঞ্চলে কয়েকটি ওয়ার্ডে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দ্রুত সহায়তা প্রয়োজন।
তিস্তা ব্যারাজে নিয়োজিত পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, পানির প্রবাহ বাড়ছে এবং তা নিয়মিত নজরে রাখা হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি কিছুটা বেড়েছে ঠিকই, তবে এখনো বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
লালমনিরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, উজান থেকে প্রচুর পানি আসছে, সঙ্গে স্থানীয়ভাবে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
আমার বার্তা/এমই