জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক না থাকায় শ্বাসকষ্টে রোগীর মৃত্যু

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক না থাকায় শ্বাসকষ্টে ভুগে জামাল বাদশাহ (৫৫) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এমবিবিএস চিকিৎসক কালিপদ সরকার ৫০০ টাকার বিনিময়ে একজন ডিএমএফ (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি ) পাস ছাত্রকে বসিয়ে রেখে তিনি লালমনিরহাটে নিজের ব্যক্তিগত চেম্বারে অবস্থান করছিলেন।

জামাল বাদশাহ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতের দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা বারান্দায় পড়ে থাকলেও কোনো চিকিৎসক কিংবা সংশ্লিষ্ট কেউ চিকিৎসা দেননি। পরবর্তীতে রুবেল নামে একজন ডিএমএফ পাস ছাত্র এসে দায়সারাভাবে রোগীকে দেখে জানান, রোগী মারা গেছেন।

রোগীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে জরুরি বিভাগে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে খুঁজতে থাকেন। তখন তারা জানতে পারেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক কালিপদ সরকার তার স্থলে রুবেল নামের ওই ডিএমএফ পাস ছাত্রকে বসিয়ে গ্রামে গেছেন।
 
পরে অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও জরুরি বিভাগ ছুটে আসেন। এ সময় আরএমও হাসপাতালে এসে দায়িত্বরত চিকিৎসককে ফোন দিলে তিনি বাইরে আছেন বলে জানান। ততক্ষণে খবর পেয়ে অনেক সাংবাদিকও জরুরি বিভাগে এসে উপস্থিত হন।  

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে কালিপদ সরকার নামের একজন এমবিবিএস চিকিৎসককে জরুরি বিভাগের দায়িত্ব দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই চিকিৎসক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে তার স্থলে ৫০০ টাকার বিনিময়ে একজন ডিএমএফ পাস করা ছাত্রকে দায়িত্ব দিয়ে লালমনিরহাটে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চলে যান।

নিহত রোগীর স্বজন একরামুল হাসান বলেন, আমার ফুপার রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে জরুরি বিভাগের সামনে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাই না। পরে রুবেল নামের এক ডিএমএফ ডাক্তার এসে দেখতে দেখতে তার মৃত্যু হয়। ফুপার চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যু হলো। আর এমন যেন অমানবিক মৃত্যু কারও না হয় এই কামনা সরকারের কাছে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে হাসপাতালে। কী কারণে দায়িত্বরত চিকিৎসক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও অর্থের বিনিময়ে কাউকে যদি জরুরি বিভাগে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন, তারও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়টি জানতে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকনের মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

আমার বার্তা/এল/এমই