পাথরঘাটায় ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে জামায়াত কর্মীর উপর দুর্ধর্ষ হামলা

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৫, ২১:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

  পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা:

ছবি : সংগৃহীত

বরগুনার পাথরঘাটায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ছাত্রশিবির নেতাদের সাথে ছাত্রদল নেতাদের বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে জামায়াতের পৌর আমির ও কর্মী নাসির উদ্দিন চোধুরীর উপর   ছাত্রদল নেতা অমিত হাসান শুভ এর নেতৃত্বে রামদা দিয়ে দুর্ধর্ষ হামলা। 

 এ সময় জামায়াতের কর্মী নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরন করেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে পাথরঘাটা শহরের ইমান আলী সড়করে উত্তর মাথায় এঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  মো. মেহেদী হাসান। বিষয়টি নিয়ে শহরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে  নৌ-বাহিনী ও অতিরিক্ত  পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

আহত নাসির উদ্দিন পাথরঘাটা  পৌর শহরের শাহাবুদ্দিনের ছেলে জামায়াতের কর্মী  এবং ইসলামি ছাত্র শিবিরের পাথরঘাটা পৌর শাখার সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমানের বাবা।

মামলার আসামীরা হলো, পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আরাফাত রহমান অভি, পৌরসভার সাবেক দপ্তর সম্পাদক অমিত হাচান শুভ, কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক মুনিম, আল আমিন বায়জিদ, মাহবুব, জিহাদ খান, বাশার, শাওন। পাথরঘাটা পৌর ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক অমিত হাসান শুভ। এরা সবাই ছাত্রদলের পদ বঞ্চিত । এদের বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে যেমন প্রেস ক্লাবে হামলা, সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলা, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে চাঁদাবাজি, রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় মূলত এই সন্ত্রাসী হামলার কর্মকাণ্ড চালায় পাথরঘাটা কলেজের সাবেক দপ্তর সম্পাদক অমিত হাসান শুভ এর নেতৃত্বে হয়। 

ছাত্রশিবিরের পৌর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা পৌরসভার সামনে ছাত্রদলরে নেতা অমিত হাসান শুভর অনুসারীরা এসে ছাত্র শিবিরের ছেলেদেকে উত্যাক্তের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তর্কে জড়ায়। বিষয়টি শিবিরের ছেলেরা প্রমাণ করতে বললে তারা বলেন তাদের বড় ভাই শুভ এসে সমাধান করবেন। কিছুক্ষণ পরে শুভ আসলে শিবির ও ছাত্রদলের ছেলেরা আবারো তর্কে জড়ান। পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য থানার পুলিশ এসে তাদেরকে থানায় নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই আলামিন, বাইজিদ, মাহাবুব, শাওনসহ একাধিক ব্যক্তি মোটরসাইকেলে দেশীয় অস্ত্র মহড়া করেন। পরে পাথরঘাটা পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা বজলুর রহমানরে ফার্মেসিতে হামলা চালায়। এ সময় পাথরঘাটা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী ও জামায়াতের কর্মী নাসিরুদ্দিনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখন পড়ে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক অমিত হাসান শুভ জানান, তাকে মিথ্যা ভাবে ফাঁসানো হয়েছে এ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানে না। উল্টো রাতে তার উপরে হামলা হয়েছে। সে রাজনীতি করেন তাই হয়তো কেউ ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি। 

পাথরঘাটা উপজেলা জামাতের আমির মাওলানা মাসুদুল আলম জানান, জামায়াতের পৌর আমীর মাওলানা বজলুর রহমান ও নাসির উদ্দিনের উপরে হামলা করেছে। আমাদের কর্মী নাসিরুদ্দিন এখন মৃত্যু শয্যায়। যারা কুপিয়েছে সেই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমরা থানা মামলা করেছি।

পাথরঘাটা পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব ইসমাইল শিকদার সাংবাদিকদের জানান, পৌর শহরের ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় সালিশ মীমাংসার জন্য বসেছিলাম। এ সময় জামাত ইসলামের কর্মীকে কারা কুপিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। 
এদিকে হামলার পরবর্তী সময় পাথরঘাটা পৌরশহরে পৌর জামায়াতের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। 

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, মারামারির ঘটনা নিয়ে একটি থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে শহরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করলে পুলিশে নৌ-বাহিনীর টহল জোরদার রয়েছে।