বদলে গেছে পাহাড়ের দৃশ্যপট শান্তি চুক্তির ২৫ বছরে 

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি যা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি,১৯৯৭ নামেও পরিচিত। এটি একটি রাজনৈতিক চুক্তি এবং শান্তি চুক্তি যা বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (PCJSS)এর মধ্যে ১৯৯৭ সালের ২ রা ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিটি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনগণ ও উপজাতিদের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করে এবং শান্তিবাহিনী ও সরকারের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা বিদ্রোহের অবসান ঘটায় বলে মনে করা হয়।

শান্তি চুক্তির ২৫ বছরের বদলে গেছে পাহাড়ের দৃশ্যপট। সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। তবে সাম্প্রতিককালে খুন, গুম, অপহরণ, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জাতিগত ভেদাভেদ, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বসহ বিভিন্ন কারণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে এর  পরিবেশ। ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে মানুষের সাধারণ জীবনমান।  

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপনে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন।  কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং কেক কাটা, আলোচনা সভা, রোড শো, ব্যানার-ফেস্টুন-ডিজিটাল ডিসপ্লে, চুক্তি পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় নানা উন্নয়ন বিষয়ক প্রচার-প্রচারণা, স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা বিকালে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে সম্প্রীতি কনসার্ট ও ফানুস ওড়ানো হবে।

বলা যায়, পার্বত্য চুক্তির ফলে বদলে গেছে পাহাড়ের দৃশ্য। দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংঘাত বন্ধে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে, উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে। এক সময়ের  দুর্দান্ত প্রভাবশালী শান্তি বাহিনীর গেরিলাদের গায়ে শোভা পাচ্ছে পুলিশের পোশাক। চুক্তির ফলে স্বাভাবিকতা ফিরে আসায় দূর পাহাড়ের বুক চিরে রাত-দিন ছুটছে যানবাহন। এক সময় জেলার বাইরের অন্য জেলার সঙ্গে ৩টার পর যোগাযোগ করার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না। চুক্তির ফলে সাজেকে গড়ে উঠেছে বড় বড় হোটেল-রেস্তোরাঁ। প্রতিনিয়ত আসছেন হাজার হাজার পর্যটক।

সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরির্বতন এসেছে। যোগাযোগা ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে দুর্গম পাহাড়ি জনপদের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানউন্নয়নসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।

তবে চুক্তির ২৫ বছরেও পাহাড়ে পুরোপুরি শান্তি ফেরেনি। এখনও ঘটছে গোলাগুলি, রক্তক্ষয়ী সংঘাত, সংঘর্ষ, চাঁদাবাজি, খুন, গুম ও অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।  শান্তিচুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন হলেও ভূমি জটিলতাসহ কয়েকটি ইস্যুতে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্বত্য জেলাগুলোতে বিদ্যমান সশস্ত্র গ্রুপগুলোর আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও পারস্পরিক দ্বন্দ্বের কারণে পাহাড়ের পরিবেশ দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। নিজেদের স্বার্থে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতি ভেঙে এখন চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। চার সংগঠনের আধিপত্য বিস্তারের কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। 


এবি/ইজা