উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে ফ্রেশার্স রিসেপশন ও ইইই ডে ২০২৫ অনুষ্ঠিত
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ১৬:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ইইই সোসাইটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ইইই ডে ২০২৫।
শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চা, সৃজনশীলতা এবং সামাজিক সম্পৃক্ততার চেতনায় অনুপ্রাণিত করতে আয়োজিত এই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি ছিল এক অনবদ্য উদাহরণ।
দিনটির শুরুটা ছিল নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত এক উষ্ণ ও প্রাণবন্ত ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম দিয়ে, যেখানে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শীর্ষ প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক ও প্রেরণাদায়ক বক্তব্য প্রদান করেন।
উপাচার্য প্রফেসর ড. আইয়াসমিন আরা লেখা এক অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি তাঁর আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং শুরু থেকেই সততা ও আজীবন শেখার মানসিকতা ধারণ করার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান এরপর, ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান ও স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অ্যাসোসিয়েট ডিন প্রফেসর ড. মো. শাকাওয়াত জামান সরকার নবাগত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিভাগীয় শুভেচ্ছা জানান এবং উদ্ভাবন, সহযোগিতা এবং একাডেমিক দৃঢ়তার গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী তাঁর বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নিয়মনীতি ও নৈতিক কাঠামোর কথা তুলে ধরেন। সবশেষে, স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং- -এর ডিন প্রফেসর ড. মির্জা গোলাম রাব্বানী প্রকৌশলী হিসেবে সফল হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি বাস্তবভিত্তিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ইইই সোসাইটির সভাপতি ও ইইই বিভাগের প্রভাষক জিয়াদ বিন আসাদ। তাঁর বক্তব্যে তিনি অতিথিদের স্বাগত জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সক্রিয় ক্লাবের কথা তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
দিনটির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল ইঞ্জিনিয়ার শেখ রাফাত বিন আলীর পরিচালিত প্রযুক্তিনির্ভর টক সেশন। আল্টেরিয়র ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে তিনি এক উদ্দীপনামূলক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ টেক সেমিনারে বৈশ্বিক প্রকৌশল ক্ষেত্রের বাস্তবচিত্র তুলে ধরেন এবং শিক্ষার্থীদের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন। তাঁর বক্তৃতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, যেখানে দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস ও পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি জগতে মানিয়ে নেওয়ার কৌশল ছিল মূল বার্তা। সেমিনারের পাশাপাশি ওয়ালটন লিফট বিডি- এর সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক মি. আরুন কুমার পাল ও সেফগার্ড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মি. শাহাদাত জোয়ারদার তাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রকৌশল শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গঠনে দিকনির্দেশনামূলক বার্তা দেন।
এরপর অনুষ্ঠিত হয় বহুল প্রতিক্ষীত প্রজেক্ট শোকেসিং এবং রোবো সকার প্রতিযোগিতা। এই অংশে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা, উদ্ভাবনী চিন্তাধারা এবং দলগত কাজের মনোভাব তুলে ধরে দর্শকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়। প্রযুক্তিভিত্তিক ইভেন্টের পাশাপাশি আয়োজিত হয় ইনডোর ও আউটডোর গেমস, যা পুরো দিনব্যাপী আয়োজনে একটি আনন্দময় ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সেজে ওঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের গানে, নৃত্যে এবং মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় জমে ওঠে প্রাণবন্ত এক সমাপ্তি।
সমাপনী বক্তব্যে ড. মো. শাকাওয়াত জামান সরকার এই অনুষ্ঠানের সফল বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই ধরনের আয়োজন প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিকভাবে নয়, সামাজিক ও সৃজনশীলভাবে বিকশিত হতে সহায়তা করে। দিনটি শেষ হয় এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান-এর মাধ্যমে, যেখানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরষ্কৃত করা হয়।
এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান, উদ্ভাবন, নেতৃত্ব এবং সহযোগিতার এক প্রাণবন্ত সম্মিলন, যা আগামীর প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বের নির্মাতা হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে অনন্য ভূমিকা রাখবে।
আমার বার্তা/এল/এমই