বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রবেশকে অনিয়মতান্ত্রিক বললেন ভিসি
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৫:২৯ | অনলাইন সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ শীর্ষ নেতাদের প্রবেশ ও জনসমাগমকে কেন্দ্র করে গতকাল থেকে আন্দোলন চলছে।
আন্দোলনের মুখে শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার। এ সময় তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করায় ছাত্রলীগের সমালোচনা করেন। উপাচার্য বলেন, গভীর রাতে কেউ (ক্যাম্পাসে) ঢুকলে এটা অবশ্যই অনিয়মতান্ত্রিক। যদি কোনো নিরাপত্তারক্ষী বহিরাগত ব্যক্তিদের ঢুকতে দিয়ে থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আর কে কে ঢুকেছে, তাদের তো আগে চিহ্নিত করতে হবে। চিহ্নিত না করে তো শাস্তি দেওয়া যাবে না। তার জন্য সময় প্রয়োজন।
উপাচার্য বলেন, পুরো ঘটনা তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে।
গত বুধবার রাত ২টার দিকে নেতাকর্মীসহ বুয়েটে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। অথচ রাত সাড়ে ১০টায় বুয়েটের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আববার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে। এরপর থেকে শুক্রবার থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ছাত্রলীগের কমিটিতে পদপ্রাপ্ত ২১ ব্যাচের ছাত্র ইমতিয়াজ রাব্বিসহ আরও চার শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে এনেছেন। তারা রাব্বিসহ বাকিদের স্থায়ী অ্যাকাডেমিক বহিষ্কারের দাবি জানান।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, ইতমিয়াজ রাব্বিকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু অ্যাকাডেমিক বহিষ্কার শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক ডেকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে করতে হবে। শৃঙ্খলা কমিটির সভার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন লাগবে। তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া শৃঙ্খলা কমিটি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
তিনি বলেন, এভাবে শাস্তি দেওয়া হলে আদালতে গিয়েও টিকবে না। ফলে তদন্ত লাগবে এবং তদন্তে অভিযুক্তকেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। আমাদের আইন ও নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আজকে থেকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ৬ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটিকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা পরীক্ষা স্থগিত করিনি, তারা (শিক্ষার্থী) বর্জন করেছে। তারা পরীক্ষা স্থগিতের আবেদনও করেনি। তারা এখানে ভুল করেছে। পরীক্ষা হয়েছে, কিন্তু তারা পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। শিক্ষার্থীরা ফের পরীক্ষার জন্য আবেদন করলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বিবেচনা করতে পারে বলে জানান তিনি।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে বুয়েট উপাচার্য বলেন, ডিএসডব্লিউর পদত্যাগের এখন আমরা চিন্তা করছি না। কারণ এটা নিয়ম মেনে ব্যবস্থা হবে। তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে। ডিএসডব্লিউ বলেছেন, তাঁর পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না। শিক্ষার্থীরা দাবি করতেই পারে, কিন্তু দাবির মুখে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।
এদিকে মধ্যরাতে কীভাবে ক্যাম্পাসে বহিরাগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করেছে এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানান উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার।
আমার বার্তা/এমই