জাবি সহকারী প্রক্টরের অনৈতিক ঘটনার তদন্তের দাবি

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:০৬ | অনলাইন সংস্করণ

  সৌরভ শুভ, জাবি:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী প্রক্টর এবং পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নসহ নানা অভিযোগের ঘটনায় তদন্তের দাবি করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

আজ বৃহস্পতিবার  দুপুর ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এসময় বক্তারা ৩ দফা দাবি পেশ করেন। দাবি গুলো হলোঃ

 ১. অভিযোগ তদন্তে অবিলম্বে একটি স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠন।
২. প্রাথমিক সত্যতা থাকায় বিধি অনুযায়ী অভিযুক্তকে তার সকল পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত ।
৩. তদন্ত সাপেক্ষে তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।

এ ঘটনায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রয়োজন নেই দাবি করে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভিন জলি বলেন, 'এ ঘটনার ২৬টি অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। রেকর্ড শোনার পর মনে হয়েছে তার শিক্ষক থাকার যোগ্যতা নেই । জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রমাণসহ নিউজ হওয়ার পরেও প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব রয়েছে। যে ধরনের তথ্য-উপাত্ত আছে তার উপর ভিত্তি করে স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠনে কোন বাধা নেই।'

তিনি আরো বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। গত কয়েকটি ঘটিনার সুষ্ঠু  তদন্ত হয়নি। ৮ তারিখের সিন্ডিকেট সভা আছে। সব মতের শিক্ষককে নিয়ে তদন্ত কমিটি করতে হবে। তদন্ত শুরু না করলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, 'শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য নিয়োজিত ব্যক্তিই যদি শিক্ষার্থীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তার সে পদে থাকার যোগ্যতা নেয়।'

শিক্ষক সমিতির সদস্য ও ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মো: সোহেল রানা বলেন, 'এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। নিজেদের ভেতরে আলোচনা হচ্ছে। সামনে জেনারেল মিটিং ও এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।'

শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরের পদ ব্যবহার, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন এবং তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে প্রভাব বিস্তার। ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন ও তাকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করা। এই দুটি সবচেয়ে গুরুত্ববহ অভিযোগ বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধান অনুযায়ী এগুলো নৈতিক স্খলন ও অসদাচরণজনিত অপরাধ। ঘটনার সত্যতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে বেশকিছু ফটোগ্রাফ, চ্যাটবক্সের স্ক্রিনশট এবং অডিও ক্লিপের মাধ্যমে। এসব তথ্য-উপাত্ত বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটি, সাংবাদপত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।অভিযোগগুলো প্রমাণের পক্ষে বেশকিছু তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছে রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তি শিক্ষকতার পদে যুক্ত থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন বলে মনে করেন শিক্ষকবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মানস চৌধুরী,পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরীন জলি, নৃবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ফাহিমা আল ফারাবীসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


এবি/ইজা